ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বুধবার (২২ মে) প্রতিনিধি পরিষদের এক কমিটির সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় আচমকা তাকে বাধা দেওয়া হয়।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্লিঙ্কেন হাউস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন কমিটির আইন প্রণেতাদের সামনে কথা বলছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি চিৎকার করতে থাকেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমাদের সবাইকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ফিলিস্তিনকে মুক্ত করুন। সব মুক্তির সংগ্রামের পক্ষে আমরা।’
এ সময় পুলিশ চেম্বার থেকে ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে দেয়। তখন তিনি বলতে থাকেন, ‘আমাকে নয়; আপনাদের উচিত ব্লিঙ্কেনকে গ্রেপ্তার করা।’
এর আগে মঙ্গলবার (২১ মে) কংগ্রেসের এক শুনানিতে ব্লিঙ্কেন ডান ও বামপন্থিদের উভয়পক্ষের সমালোচনার মুখে পড়েন। রিপাবলিকানরা বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ করেন। তাদের দাবি, ডেমোক্র্যাট সরকার গাজার বেসামরিক লোকদের সাহায্য করার জন্য খুব একটা কাজ করেনি।
ডেমোক্র্যাটিক দলের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সামনে শুনানি শুরুর সময় বিপাবলিকানরা তাকে বাধা দেন।
এ সময় তারা সেখানে চিৎকার করে বলতে থাকেন, ব্লিঙ্কেনের হাতে রক্ত লেগে আছে।
এ ছাড়া এক প্রতিবাদকারী ব্লিঙ্কেনের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করেন। তিনি তাকে অপরাধী বলে আখ্যা দেন। পরে ওই বিক্ষোভকারীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বের করে নিয়ে যান।
গত বছর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জেরে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার ৭০ শতাংশ বাড়িঘর। আহতদের আর্তনাদে ভারী হয়ে গেছে গাজার আকাশ।
এ পরিস্থিতিতে গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রতিবাদের জোয়ার বইছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে চাপে আছে বাইডেন প্রশাসন। তবু ইসরায়েলকে চাপ প্রয়োগে নারাজ যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির অবস্থান হচ্ছে, আত্মরক্ষার স্বার্থে গাজায় ইসরায়েল যে অভিযান করছে তা যৌক্তিক। এ পরিস্থিতির জন্য ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দায়ী করছে তারা।
এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। ফলে এ প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ না হওয়ার আশঙ্কা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করছে সৌদি আরব। তবে ইসরায়েল এটি আগায়ে নিতে আগ্রহী নয়।
এ ছাড়া ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের দাবি নিয়ে তিনি বলেন, আমি শুধু বলব, গাজা ইস্যুতে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র।
মন্তব্য করুন