গাজায় সাত মাস ধরে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় পারমাণবিক বোমা ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মার্কিন ওই সিনেটর বলেন, চলমান অস্তিত্বের যুদ্ধে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের জয় পাওয়ার জন্য তাদের যা প্রয়োজন তাই করতে হবে। তিনি বলেন, ঠিক যেভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক বোমা ফেলাও ন্যয়সঙ্গত ছিল।
রোববার এনবিসি নিউজের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গাজায় বেসামরিক হতাহতের জন্য হামাস দায়ী। এ যুদ্ধে বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ইসরায়েলকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। আর সেটা যে কোনো মূল্যেই হোক না কেন।
গ্রাহাম বলেন, পার্ল হারবারে হামলার পরে যখন আমরা জাতি হিসেবে জার্মান এবং জাপানিদের সঙ্গে যুদ্ধে ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছিলাম, আমরা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে বোমা হামলা করে যুদ্ধ শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সুতরাং ইসরায়েলকে ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকার জন্য যা প্রয়োজন তাই করতে হবে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলকে (পারমাণবিক) বোমা দেওয়া উচিত যাতে করে তারা এ যুদ্ধ শেষ করতে পারে। তারা এখানে হারতে পারে না।
ইসরায়েলের কট্টর এই সমর্থক নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলকে অস্ত্র দেওয়ার বন্ধ করা উচিত হয়নি। এ ছাড়া গাজায় বেসামরিক প্রাণহানির জন্য হামাসকেই দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করেন, হামাস বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন