সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক গোপনীয়তা ও সামরিক পরিকল্পনাসহ শত শত রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথির অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ট্রাম্প দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির গোপন নথি নিজের ব্যক্তিগত বাথরুমে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরক্ষাবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ন্যায়বিচারে বাধা সৃষ্টি করাসহ ৩৭টি সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ এনেছে দেশটির বিচার বিভাগ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৯ জুন) ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী বছর হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের প্রার্থী হওয়ার দৌঁড়ে থাকা ট্রাম্প অন্যায় কিছু করার কথা অস্বীকার করেছেন।
শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর এসব নথি নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। পারমাণবিক কর্মসূচির গোপন নথি নিজের ব্যক্তিগত বাসভবনের বাথরুমেও রেখেছিলেন তিনি।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কয়েকটি বাক্সে ভরে গোপন নাথিগুলো ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো অবকাশযাপন কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন। ট্রাম্পের কাছে থাকা গোপন নথিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির বিস্তারিত ছিল। এসব নথি হাতছাড়া হলে হুমকির মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে থাকা গোপন নথিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির বিস্তারিত, যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদেশগুলোর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঘাটতির দিক এবং আক্রান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলার মাধ্যমে কীভাবে পাল্টা জবাব দেবে, সেসব পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য ওই নথিতে রয়েছে।
নিজ বাসভবন ছাড়াও কিছু গোপন নথি তদন্তকারী ও নিজের আইনজীবীদের কাছেও লুকিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। কয়েকটি বাক্সে ভরে নথিগুলো ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো অবকাশযাপন কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে কিছু নথি নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যে নিজের গলফ ক্লাবে সরিয়ে নেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দুই দফায় পারমাণবিক অস্ত্র-সম্পর্কিত গোপন নথি অন্যদের দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প। এই ব্যক্তিদের কেউই নথিগুলো দেখার জন্য অনুমোদিত ছিলেন না।
বলা হচ্ছে, গোপনীয় এসব নথি বেহাত হলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
আগামী ১৩ জুন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৭৭তম জন্মদিনে মায়ামি আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। এ মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিকে, হঠাৎ করেই ট্রাম্পের দুই আইনজীবী জিম ট্রাস্টি ও জন রাউলি মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মাঝে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলে মন্তব্য করেছেন ডেমোক্র্যাট দলের অনেকে।
এর আগে পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার ঘটনায় গত মার্চে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প।
মন্তব্য করুন