ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সমুদ্র ও স্থলপথে মানবিক ত্রাণসহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন সেনেটর জেফ মার্কলে। শনিবার (২ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গাজায় বিমানে করে খাবার দেওয়ার পর তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রতি এই আহ্বান জানান। খবর আলজাজিরার।
ওরেগন রাজ্যের ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর জেফ মার্কলে এক এক্সবার্তায় লিখেন, গাজায় নিদারুণভাবে প্রয়োজনীয় মানবিক ত্রাণসহায়তা বিমান থেকে ফেলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি একটি মহান পদক্ষেপ। সংকটের এই সময়ে তুলনামূলক হারে ত্রাণসহায়তা দিতে সমুদ্র ও স্থলপথের বিষয়টি যোগ করুন।
তিনি আরও বলেন, আমি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর পাশাপাশি গাজায় প্রয়োজনীয় ত্রাণসহায়তা—খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র—ব্যাপকহারে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান অব্যাহত রেখেছি। আমরা দুটি বিষয়কে সহজ করতে পারে এবং আমাদের দুটাই করতে হবে।
শনিবার (২ মার্চ) তিনটি সামরিক বিমানে করে গাজার উপকূলীয় এলাকায় প্রথমবারের মতো খাবার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, শনিবার তিনটি সি-১৩০ বিমান থেকে ৩৮ হাজারের বেশি খাবার গাজার উপকূলীয় এলাকায় ফেলা হয়েছে। স্থল করিডোর ও রুটের মাধ্যমে গাজায় ত্রাণের প্রবাহ বাড়াতে টেকসই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিমানে করে এসব খাবার দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) বিমানে করে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের খাবার সরবরাহের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ত্রাণসহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পরই তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে গাজা সিটির কাছে ফিলিস্তিনিরা একটি ত্রাণবাহী গাড়ির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষকে গুলি করে হত্যা করে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ইসরায়েল। এই ঘটনার পরপর গাজায় ত্রাণসহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন বাইডেন।
এর আগে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, মিসর, জর্ডানসহ অন্যান্য দেশ গাজায় বিমান থেকে ত্রাণসহায়তা ফেলেছে। তবে এবারই প্রথমবারের মতো এই পথে হাঁটল ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছন, গত বৃহস্পতিবারের বেদনাদায়ক ঘটনা গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণসহায়তা সম্প্রসারণ ও টেকসই করার গুরুত্ব সামনে নিয়ে এসেছে। তবে দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, বিমানে করে ত্রাণসহায়তা ফলপ্রসূ কোনো উপায় নয়।
বাস্তুচ্যুত গাজার বাসিন্দা মেধাত তাহের বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এই ধরনের পদ্ধতি খুবই নগণ্য। এটি কি একটি স্কুলের জন্য যথেষ্ট হবে? এটি কি ১০ হাজার মানুসের জন্য যথেষ্ট? এর চেয়ে স্থল সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানো ভালো।
মন্তব্য করুন