যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে এক ব্যক্তি নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধ ওই ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং তিনি মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে এক ব্যক্তি নিজেকে আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছেন বলে জরুরি পরিষেবার খবরে বলা হয়েছে। খবর পেয়ে উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং তার গায়ের আগুন নেভায়।
হাসপাতালে নেওয়ার আগে উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, আগুনে ওই ব্যক্তির শরীরের অনেকটাই পুড়ে গেছে। তবে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ওই ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে কিছুই জানায়নি পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে যে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ওই ব্যক্তি গায়ে আগুন দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি কূটনৈতিক মিশনের সামনে এ ধরনের আত্মহত্যার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও গত ডিসেম্বরে অপর এক ব্যক্তি গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তখন অবশ্য তার কাছে ফিলিস্তিনের একটি পতাকা পাওয়া গিয়েছিল। তবে এবার যিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, তার আশপাশে সে ধরনের কিছু পাওয়া যায়নি। ওয়াশিংটন পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির উদ্দেশ্য ঠিক কি ছিল, সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এর আগেও ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত ডিসেম্বরেও যুক্তরাষ্ট্রে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল।
তখন ফিলিস্তিনি সমর্থক এক ব্যক্তি জর্জিয়া রাজ্যের ইসরায়েলি কনস্যুলেটের সামনে গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তখন তাকেও গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
ওই ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক প্রতিবাদের উগ্রবাদী পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছিল পুলিশ।
ঘটনার পর পুলিশ জানিয়েছিল যে, আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ওই ব্যক্তির পাশেই একটি পেট্রলের বোতল এবং একটি ফিলিস্তিনি পতাকা পাওয়া গেছে।
আগুন দেওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে একজন নিরাপত্তারক্ষীও আহত হয়েছিলেন। পরে দুজনকেই হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আটলান্টার পুলিশ প্রধান ড্যারিন শিয়েরবাউম তখন বলেছিলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ ছিল। দূতাবাস ভবন নিরাপদ রয়েছে এবং আমরা এখানে কোনো হুমকি দেখছি না।’
অন্যদিকে, ঘটনা জানতে পেরে দুঃখপ্রকাশ করেন দক্ষিণ-পূর্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের কনসাল জেনারেল আনত সুলতান-দাদন।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের বন্দুকধারীদের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় তাদের অভিযান শুরু করে। হামাসের হামলায় ১২শ ব্যক্তি নিহত হয়। জিম্মি করা হয় ২৪০ জনকে।
পরে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক, এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে রাফাহ শহরে। মিসর সীমান্তবর্তী এই শহরে এর আগে বাস করত মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ।
বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে অনেকেই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বা তাঁবুতে বসবাস করছে। আশ্রয় শিবিরের ভয়াবহ পানি ও খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন