এক সময়ের মধ্যপ্রাচ্যের ত্রাশ জেনারেল কাশেম সুলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ এখনো নিতে পারেনি ইরান। তবে জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার সপ্তাহ না পেড়োতেই ভয়াবহ তাণ্ডব দেখাল পেন্টাগন। মাত্র ৩০ মিনিটে ইরাক-সিরিয়ায় ইরানের ৮৫টি স্থাপনায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেন জানান দিয়েছে তাদের প্রতিশোধের আগুন কতোটা উত্তপ্ত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র যে কতোটা বারুদ হয়ে ছিলো তা অবশ্য বুঝতে দেয়নি ইরানকে। বাইডেন প্রশাসন বারবার বলে আসছিল, তারা যুদ্ধ চায় না তবে জর্ডানে তাদের ঘাঁটিতে হামলার জবাব দিতে প্রস্তুত। এর জেরেই শুক্রবার এই হামলা চালানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এদিন ইরাকে তিনটি ও সিরিয়ায় চারটি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া লক্ষ্যবস্তুগুলোর মধ্যে ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার এবং ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমান হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে বি-১ বোমারু বিমানও ছিল। এসব বিমানে ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল নির্দেশিত যুদ্ধাস্ত্র বহন করা হয়। এই হামলাকে গত রোববার সিরিয়ার সীমান্তের কাছে জর্ডানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। সামরিক ঘাঁটিতে ওই হামলায় তিন মার্কিন সেনা নিহত হন এবং আহত হন ৪১ জন।
ওই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত একটি সশস্ত্র গ্রুপকে দায়ী করে আসছিল ওয়াশিংটন। এর জবাবে সিরিয়া ও ইরাকে অবস্থিত ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় ধারাবাহিকভাবে হামলা চালানোর পরিকল্পনায় অনুমোদন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কবে থেকে হামলা শুরু করা হবে, তা স্পষ্ট করে না জানালেও একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন, কয়েক দিন ধরে হামলা চালানো হবে।
প্রায় চার মাস ধরে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জেরে মধ্যপ্রাচ্য আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। এ ছাড়া ইরান-সমর্থিত হুতিদের রুখতে ইয়েমেনে মার্কিন হামলা চলমান রয়েছে।
বিশ্লেষকরা শঙ্কা করছে, এর মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ায় নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনা ওই অঞ্চলকে দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এমনকি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে যুদ্ধ।
মন্তব্য করুন