ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবার আদালতের দ্বারস্ত হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। দেশটির স্বনামধন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় বিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ কাটছাঁট ঠেকাতে মার্কিন ফেডারেল আদালতে মামলা করেছেন।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে মামলা করেছে। প্রশাসনের বিলিয়ন ডলারের তহবিল বরাদ্দ কাটছাঁট ও করমুক্ত মর্যাদা বাতিলের হুমকির বিরুদ্ধে আইনি প্রতিরোধ গড়ার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজ ও হার্ভার্ডের মধ্যে তীব্র বিরোধের পর এ মামলা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত ২ বিলিয়নের বেশি ফেডারেল তহবিল হঠাৎ করেই স্থগিত করে প্রশাসন। এর পাশাপাশি প্রশাসনের তরফ থেকে হার্ভার্ডের করমুক্ত মর্যাদা বাতিলের হুমকিও দেয়া হয়।
হার্ভার্ড জানিয়েছে, এটি সরাসরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির স্বায়ত্তশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ এবং ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধ’-এর শামিল।
বিবিসি জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন হোয়াইট হাউস হার্ভার্ডকে ইহুদি বিদ্বেষ মোকাবিলায় একটি ‘শর্তসাপেক্ষ কর্মপরিকল্পনা’ জমা দেয়ার দাবি জানায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার কিছু অংশ প্রত্যাখ্যান করে জানায়—এই ধরনের নির্দেশনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা এবং নীতিমালার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ।
প্রশাসনের দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতো এবং কার্যত সরকারি নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে দিত বলে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, এই পদক্ষেপ কেবল হার্ভার্ডের উপর আঘাত নয়, বরং এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হুমকি। আমরা আদালতের কাছে আশ্রয় নিয়েছি, কারণ আমাদের বিশ্বাস—এই ধরনের হস্তক্ষেপ সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যম ও শিক্ষাক্ষেত্রে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করেছে এবং অনেক সাবেক ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষাবিদ হার্ভার্ডের পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, সরকারের দায় রয়েছে—যেসব প্রতিষ্ঠানে ফেডারেল তহবিল যায়, সেগুলোর স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা। হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত পুরোপুরি নীতিনির্ধারক ও জনস্বার্থে।
মন্তব্য করুন