শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শুল্কনীতি দিয়ে ট্রাম্প চেয়েছিলেন কী, পেলেন কী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে একটি বড় ধরনের শুল্ক পরিকল্পনার ঘোষণা দেন, যা বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে সেই পরিকল্পনার বড় একটি অংশ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি ৯০ দিনের জন্য বেশিরভাগ দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক স্থগিত করেছেন। কিন্তু চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ পরিবর্তনের মাধ্যমে ট্রাম্প তার বাণিজ্যনীতির উদ্দেশ্যগুলোর কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন, তা নিয়েই এই প্রতিবেদন।

১. যথাযথ বাণিজ্যচুক্তি করা

ট্রাম্প বারবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শোষণ করেছে। তার প্রস্তাবনায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক এবং কিছু দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছিল। এতে বিশ্বের বহু দেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। ট্রাম্প দাবি করেন, বিশ্বের অন্তত ৭৫টি দেশের নেতারা তার সঙ্গে চুক্তি করতে যোগাযোগ করেছেন। মার্কিন সরকার জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এসব দেশকে কোনো না কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতির কারণে অন্তত আলোচনার মাধ্যমে চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

২. অভ্যন্তরীণ শিল্প খাতকে চাঙ্গা করা

ট্রাম্পের আশা ছিল, শুল্ক বসিয়ে দেশের শিল্প খাতকে আবার সক্রিয় করবেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, হুটহাট সিদ্ধান্ত পাল্টানোর ফলে ব্যবসায়ীরা দ্বিধায় পড়ছেন। আজ যদি গাড়ি শিল্প রক্ষা পায়, কাল হয়তো ইলেকট্রনিক্স শিল্প টার্গেট হবে। শুল্ক নীতিতে ধারাবাহিকতা না থাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বড় কোনো বিনিয়োগে যেতে সাহস পাচ্ছে না।

৩. চীনের সঙ্গে শক্ত অবস্থান নেওয়া

ট্রাম্প বলেছেন, চীন বহুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে বাণিজ্যে ঠকিয়ে এসেছে। তিনি চীনকে শুল্কযুদ্ধের মূল লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন। হোয়াইট হাউজের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প এখন মূলত চীনের বিরুদ্ধে শুল্ক নীতিকে ব্যবহার করছেন। ট্রাম্প আবার এটাও বলেছেন যে, বর্তমান সমস্যার জন্য তিনি চীনকে নয়, বরং মার্কিন পুরোনো নেতৃত্বকে দায়ী করেন। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি চীন এগিয়ে এসে চুক্তির ইচ্ছা দেখায়, তবে ট্রাম্প ‘অত্যন্ত উদারতা’ দেখাবেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের সঙ্গে শক্ত অবস্থান নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় মিত্ররা দূরে সরে যেতে পারে।

৪. রাজস্ব আয় বাড়ানো

ট্রাম্প মনে করেন, শুল্ক থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আসবে, যা দিয়ে কর কমানো ও জাতীয় ঋণ পরিশোধ সম্ভব হবে। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হলে ১০ বছরে প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার রাজস্ব আসতে পারে। এদিকে মার্কিন কংগ্রেস যে করছাড় দিয়েছে, তা একই সময়ে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি তৈরি করতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

৫. ভোক্তামূল্য কমানো

ট্রাম্প বলেছেন, দেশের ভেতরে উৎপাদন বাড়লে প্রতিযোগিতা তৈরি হবে এবং এতে পণ্যের দাম কমবে। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের মতে, শুল্ক আরোপে সাধারণত পণ্যের দাম বেড়ে যায়, কারণ আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়ে এবং ঘরোয়া পণ্যের প্রতিযোগিতা কমে যায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কারণে মার্কিন পরিবারগুলোর বছরে গড়ে অতিরিক্ত ১,২৫৩ ডলার ব্যয় হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নিম্নআয়ের পরিবারগুলো এই শুল্কের বোঝা সবচেয়ে বেশি অনুভব করবে, যা ট্রাম্পের জন্য রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি, সিএনএন

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কুমিল্লায় জামায়াতের সম্মেলনে আ.লীগ নেতা

ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান মানেই আমেরিকার চোখে হুমকি

ইরানে ইসরায়েলের হামলার বিপজ্জনক তথ্য ফাঁস

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়া আরেক বাংলাদেশি যুবক নিহত

জাফরুর নতুন সভাপতি  আরেফিন অডেন, সম্পাদক আকতারুল

আশুলিয়ায় সরকারি হাসপাতালের দাবিতে শ্রমজীবী মানুষের মানববন্ধন

বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফকে দিল ভারতীয়রা

‘এখন কেউ চাইলেই ইমামকে বহিষ্কার করতে পারবে না’

বাংলাদেশের কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: উইলিয়ামস

বর্তমান অবস্থায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সম্ভব নয় : খলিলুর রহমান

১০

জলকেলিতে মাতলেন রাখাইন তরুণ-তরুণীরা

১১

অটোরিকশা নালায় পড়ে শিশু নিখোঁজ, মা উদ্ধার

১২

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

১৩

কুয়েটে আন্দোলনকারীদের গ্রাফিতিতে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি 

১৪

এবার লা লিগার সূচি নিয়ে বার্সা কোচের ক্ষোভ

১৫

ইসরায়েলের ‘অসম্ভব শর্ত’, প্রত্যাখ্যান করল ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা

১৬

নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি : এ্যানি

১৭

বিশ্বকাপে পাকিস্তান, জ্যোতিদের যে সমীকরণ

১৮

‘হাসিনার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সবাইকে সজাগ হতে হবে’

১৯

আফগান সরকারকে সুখবর দিল রাশিয়া

২০
X