বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্কারোপের পর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কেবল চীন ছাড়া সকল দেশের ওপর থেকে ৯০ দিনের জন্য শুল্কারোপ স্থগিত করা হয়েছে। তবে কেন তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে ট্রাম্পের শুল্ক প্রত্যাহারের কারণ তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে রিপাবলিকান সহকর্মী ও ব্যবসায়ী নেতারা ট্রাম্পকে শুল্ক আরোপ বন্ধ করতে অনুরোধ করে আসছিলেন। কারণ এটি বিশ্ববাজারে ধস নামাতে পারে এবং বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা বাড়াচ্ছিল। তবে ট্রাম্প বলেছিলেন, আমার নীতিতে কোনো পরিবর্তন হবে না।
তবে শেষ পর্যন্ত মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের ভিতরে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ ও বন্ড বাজারে টানাপড়েন ট্রাম্পকে অবস্থান বদলাতে বাধ্য করে। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এই সংকটের বিষয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করেন। হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক কর্মকর্তারাও মার্কিন ট্রেজারি বিক্রিতে দ্রুতগতির পতন সম্পর্কে অবহিত করেন।
ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের জানান, সিদ্ধান্তটি তাৎক্ষণিক ও হৃদয় থেকে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বন্ড মার্কেট আমি দেখছিলাম। গত রাতে কিছু লোক চিন্তিত হয়ে পড়ছিল। আমরা আইনজীবী পাইনি, এটা একেবারে আমাদের হৃদয় থেকে লেখা হয়েছে।
ট্রাম্পের এ ঘোষণার পরপরই ওয়াল স্ট্রিটে শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থান দেখা যায়। ডাও সূচক তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ২৫০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়, যা সেশনের শেষে প্রায় ৮ শতাংশ লাভে পরিণত হয়। টেক-নির্ভর ন্যাসড্যাক ১২.২ শতাংশ বেড়ে গত ২৪ বছরের মধ্যে সেরা দিনটি পার করে এবং এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৬ শতাংশ বাড়ে।
এছাড়া জ্বালানি তেলের দাম ৪ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়, এবং ডলারের মানও শক্তিশালী হয়।
এর আগে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ করেই চীন বাদে বিশ্বের অন্যান্য সব দেশের ওপর আরোপিত শুল্কে ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করেন। মাত্র একদিন আগেও যা ছিল প্রায় অসম্ভব বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে চীনের ক্ষেত্রে শুল্ক আরও বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে, যা পূর্বে ছিল ১০৪ শতাংশ।
ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ববাজারের প্রতি চীনের যে অসম্মান, তার ভিত্তিতে আমি এখনই চীনের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশে বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছি। আশা করি শিগগিরই চীন বুঝতে পারবে যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশকে শোষণ করে চলার দিন শেষ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চীন একটি চুক্তি করতে চায়, কিন্তু কীভাবে তা করতে হয়, এখনো তারা ঠিকভাবে জানে না। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একজন গর্বিত মানুষ। আশা করি তারা পথ খুঁজে পাবে।
মন্তব্য করুন