ভয়েস অফ আমেরিকার সাংবাদিকরা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। শুক্রবার মার্কিন আদালতে শ্রমিকদের বাক স্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত সংবাদ সংস্থাগুলো বন্ধ করে দেওয়া শ্রমিক আইনের লঙ্ঘন। খবর রয়টার্সের।
ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ভিক্টর মোরালেস এবং বিশেষ উপদেষ্টা কারি লেক গত শনিবার ১,৩০০ জনেরও বেশি কর্মীকে ছুটিতে পাঠিয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি সংবাদ পরিসেবার জন্য তহবিল কমিয়ে দিয়েছেন। নিউইয়র্কের ফেডারেল আদালতে করা অভিযোগ অনুসারে, এই পদক্ষেপগুলো প্রথম সংশোধনী এবং কংগ্রেস কর্তৃক ভয়েস অফ আমেরিকাকে অনুমোদিত তহবিল দেওয়া সংক্রান্ত আইনের লঙ্ঘন করেছে।
এ মামলার আবেদনে ৯০০-এর বেশি পূর্ণকালীন কর্মী এবং ৫৫০ ঠিকাদারকে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে।
মামলার বাদীদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক হোয়াইট হাউস ব্যুরো প্রধান প্যাটসি উইডাকুসওয়ারা, প্রেস ফ্রিডম সম্পাদক জেসিকা জেরিয়াট, ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার কর্মকর্তা ক্যাথরিন নিপারসহ আরও অনেক সাংবাদিক।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল তহবিলে পরিচালিত ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ) ‘ট্রাম্পবিরোধী’ ও ‘উগ্রবাদী’- এমন অভিযোগ তুলে সংবাদ সংস্থাটির ব্যয় কমিয়ে এটির আকার একেবারে ছোট করে ফেলতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করদাতাদের যেন আর উগ্রবাদী প্রচারে অর্থ ব্যয় করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টাদের অন্যতম ইলন মাস্ক তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) ব্যবহার করে ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। ট্রাম্প মার্কিন সরকারের ব্যয় কমানোর কাজ দেখভালের দায়িত্ব যে অধিদপ্তরের ওপর দিয়েছেন, মাস্ক সেটির প্রধান। ভয়েস অব আমেরিকা মূলত একটি রেডিও পরিসেবা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কাজ করতে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভিওএ কর্তৃপক্ষ বলেছে, এখনো তারা সপ্তাহে গড়ে কয়েক কোটি শ্রোতার কাছে পৌঁছাতে পারেন। ভিওএর পরিচালক মাইক আব্রামোভিচ বলেছেন, তিনি এবং বলতে গেলে তার ১ হাজার ৩০০ কর্মীর প্রায় সবাইকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এর ফলে ভিওএ তার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনে অক্ষম হয়ে পড়েছে বলেও মনে করেন আব্রামোভিচ। যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকদের সংগঠন ন্যাশনাল প্রেস ক্লাব বলেছে, এই আদেশ মুক্ত ও স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতির অবমূল্যায়ন। ট্রাম্পের আদেশের লক্ষ্যবস্তু ভিওএর মূল (মাদার) কোম্পানি ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া (ইউএসএজিএম)। সিবিএস নিউজ বলেছে, ভিওএর কর্মীদের ই-মেইল করে তাদের ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। ইউএসএজিএমের মানবসম্পদ বিভাগের পরিচালক ক্রিস্টাল টমাস কর্মীদের ওই ই-মেইল পাঠিয়েছেন।
মন্তব্য করুন