দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেই অবৈধ অভিবাসীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবেন- এই হুংকার আগেই দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প । সেই অনুযায়ী ক্ষমতা গ্রহণের পর বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে তার প্রশাসন। এবার বাবা-মা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, এমন লাখো অবৈধ অভিবাসী শিশুকে খুঁজে বের করতে অভিবাসন এজেন্টদের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যাপক বিতাড়ন অভিযানের সম্প্রসারণ বলে মনে করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই নতুন নীতির ফলে হাজার হাজার অভিবাসী শিশুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এবং এটি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের স্মারকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অভিভাবকহীন অভিবাসী শিশুদের টার্গেট করে একটি নজিরবিহীন অভিযান শুরু হচ্ছে। এতে চারটি বাস্তবায়ন ধাপের উল্লেখ করা হয়েছে। যার পরিকল্পনা ধাপ শুরু হয়েছে ২৭ জানুয়ারি থেকে। যদিও বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী—২০১৯ সাল থেকে ৬ লাখেরও বেশি অভিভাবকহীন শিশু যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করেছে। গত কয়েক বছরে দশ হাজারেরও বেশি শিশুকে নির্বাসনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৩১ হাজার শিশু শুধু আদালতে হাজির না হওয়ার কারণে নির্বাসিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং আইসিই এই স্মারক এবং ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে জিরো টলারেন্স নীতি চালু করেছিলেন। ফলে সীমান্তে শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। শিশুদের অফিস অব রিফিউজি রিসেটেলমেন্টের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়, যখন তাদের বাবা-মাকে আটক বা নির্বাসিত করা হয়। এই পরিবার বিচ্ছিন্নকরণ নীতির কারণে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনা হয়। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন এটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। তবে এখনো ১,০০০-এর বেশি শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন, আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের প্রধান আইনজীবী লি গেলারন্ট।
আইসিইর স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই অভিযানের লক্ষ্য শুধু অভিবাসন আইন প্রয়োগ করা নয়, বরং শিশুদের মানব পাচার ও শোষণের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করাও এর উদ্দেশ্য। স্মারকে আরও বলা হয়েছে, শিশুদের ইমিগ্রেশন কোর্টে হাজিরার নোটিশ দেওয়া হবে অথবা যদি ইতোমধ্যে নির্বাসনের আদেশ থাকে, তাহলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করে নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সামরিক বিমান। তথ্য বলছে, বিমানে থাকা অবস্থায় অভিবাসীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের ঘটনাও অহরহ ঘটছে। যেমন- ভারতীয়দের শিকলে বেঁধে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যা নিয়ে তৈরি হয়েছে তুমুল আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
মন্তব্য করুন