মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল গাজা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করবে। উপত্যকাটি দখলে নিতে কোনো মার্কিন সেনার প্রয়োজন হবে না। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ট্রুথ সোশ্যাল ওয়েব প্ল্যাটফর্মে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। খবর রয়টার্সের ।
গাজা উপত্যকা দখল করে ‘মধ্যপ্রাচ্যের মনোরম স্থান’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। তার পরিকল্পনার ঘোষণায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। এর একদিন পরই তিনি আবারও একই ধরনের কথা বললেন। এদিকে ইসরায়েল তার সেনাবাহিনীকে গাজা ফিলিস্তিনিদের স্বেচ্ছায় প্রস্থানে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
ট্রাম্পের ইঙ্গিত অনুযায়ী, স্থলভাগে কোনো মার্কিন সেনার প্রয়োজন হবে না। যদি উপত্যকার বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় অন্যত্র পুনর্বাসিত হয়। বর্তমানে তিনি গাজায় মার্কিন সেনা পাঠানোর অনুমোদন দিচ্ছেন না বলেও জানান।
তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষে ইসরায়েল গাজা উপত্যকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করবে। ফিলিস্তিনিরা ইতিমধ্যেই অনেক নিরাপদ এবং সুন্দর সম্প্রদায়ে পুনর্বাসিত হয়ে যেতে পারত। যেখানে নতুন এবং আধুনিক বাড়িঘর থাকবে। এটি হলে সেখানে মার্কিন সৈন্যদের কোনো প্রয়োজন হবে না।
এর আগে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের প্রস্তাবকে অসাধারণ উল্লেখ করে সমর্থন জানান। তেল আবিবে এ প্রস্তাবের সমর্থনের জোয়ার বইছে। এর মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সেনাবাহিনীকে গাজার বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় উপত্যকা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছি। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সাহসী পরিকল্পনাকে স্বাগত জানাই। গাজার বাসিন্দাদের চলে যাওয়ার এবং অভিবাসনের স্বাধীনতা দেওয়া উচিত, যেমনটি বিশ্বজুড়ে প্রচলিত।
ট্রাম্প গত দুই মাসে একাধিকবার গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। গত জানুয়ারির শেষ দিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্ডানে পাঠানোর কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর এবং জর্ডানে স্থানান্তরিত করা উচিত।
নেতানিয়াহুর সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার ভবিষ্যৎ এবং ফিলিস্তিনিদের উপত্যকা থেকে অন্যত্র সরানো নিয়ে আলোচনা করেন ট্রাম্প। ওই আলোচনায় আবারও গাজা নিয়ে উচ্চাভিলাষী প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবারের (৪ ফেব্রুয়ারি) বৈঠকটি হোয়াইট হাউসে হয়।
ট্রাম্প বলেন, গাজার একটি গ্যারান্টি হলো- তারা (ফিলিস্তিনিরা) শেষ পর্যন্ত মারা যাবে। একই জিনিস (যুদ্ধ) আবার ঘটতে চলেছে । এটা বারবার ঘটেছে এবং এটা আবার ঘটতে চলেছে। তাই আমি আশা করি, আমরা এমন কিছু করতে পারব যে- সেখানে (গাজায়) তারা ফিরে যেতে চাইবে না। কে ফিরে যেতে চাইবে? সেখানে তারা মৃত্যু এবং ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই পেয়েছে।
ট্রাম্প আরও প্রস্তাব দেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো গাজাকে জনশূন্য করে দখল করা। এরপর আগামী কয়েক বছরে এখানে মনোরম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন, আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানার কথা বলছি। আমি দেখতে পাচ্ছি এর মাধ্যমে সম্ভবত সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে দুর্দান্ত স্থিতিশীলতা আসবে।
মন্তব্য করুন