প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিত্রদেশ পানামার কাছ থেকে পানামা খাল ‘দখলের হুমকি’ দেওয়ার পরই মধ্য আমেরিকায় সফর করতে যাচ্ছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। স্থানীয় সময় শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) তিনি দেশটিতে পৌঁছাবেন বলে জানা গেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৫ শতাংশ এই খালের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই গুরুত্বপূর্ণ জলপথের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, পানামা খাল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এর নিয়ন্ত্রণ আমাদের প্রয়োজন।
‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ রুবিওর সফর
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) জানিয়েছে, রুবিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি বাস্তবায়ন করতে ১ থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পানামা, এল সালভাদর, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা ও ডোমিনিকান রিপাবলিক সফর করবেন।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো— অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা, আন্তঃদেশীয় অপরাধী গোষ্ঠী ও মাদক চক্র দমন করা, চীনের মধ্য আমেরিকায় প্রভাব প্রতিহত করা এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বাড়িয়ে আঞ্চলিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা।
রুবিও সফরের সময় ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সহযোগিতার ওপর আলোচনা করবেন।
পানামা খাল নিয়ে উত্তেজনা
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর পানামা সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা পানামা খাল নিয়ে কোনো আলোচনা করবে না।
দেশটির প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো বলেছেন, পানামা খাল নিয়ে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। এটি চূড়ান্তভাবে পানামার মালিকানাধীন। তবে মার্কিন প্রশাসন মনে করে, চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব খালের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা বাড়িয়েছে।
বর্তমানে পানামা খালের কিছু বন্দর চীনা কোম্পানির মালিকানায় রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। পানামা সরকার ইতোমধ্যে চীনা মালিকানাধীন বন্দরের অডিট কার্যক্রম শুরু করেছে, যদিও দেশটির কম্পট্রোলার এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন।
ট্রাম্পের অর্থনৈতিক কৌশল : নতুন শুল্ক কার্যকর হচ্ছে
রুবিওর মধ্য আমেরিকা সফরের দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদার— কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে এবং মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
বিশ্ব রাজনীতিতে পানামা খাল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপে পানামার প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
মন্তব্য করুন