যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের বিচারক জন কফেনর। এর ফলে ট্রাম্পের আদেশ আগামী ১৪ দিন কার্যকর হবে না। খবর এপির।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের সন্তানদের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। এটি দেশটির সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর বিরুদ্ধে। বিচারক কফেনর বলেছেন, ‘এটি স্পষ্টভাবে অসাংবিধানিক।’
এই আদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি অঙ্গরাজ্য ও নাগরিক অধিকার রক্ষাকারী সংগঠন মামলা করেছে। আদালতের স্থগিতাদেশকে তারা স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করেছে যে, কোনো প্রেসিডেন্টই নিজের ইচ্ছামতো সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেন না।
এদিকে বিচারকের এ আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার দেওয়া নির্বাহী আদেশের পক্ষে লড়াই করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগও। ট্রাম্প প্রশাসনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আদেশে মার্কিন সংবিধানের সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো শিশু যদি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মগ্রহণ করে, তবে সে মার্কিন নাগরিকত্ব পায়। তার বাবা-মা কীভাবে দেশে এসেছেন, সেটি মূখ্য নয়।
কিন্তু ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যদি অভিবাসী বা পর্যটক ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী কোনো অবৈধ অভিবাসী সন্তান জন্ম দেন, তবে সে আর মার্কিন নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত হবে না।
এই পদক্ষেপের ফলে মূলত নিম্ন আয়ের ও অভিবাসী শ্রেণির মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। বিশেষ করে, যেসব পরিবার একাধিক প্রজন্ম ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে, কিন্তু এখনো তাদের অভিবাসী স্ট্যাটাস হয়নি, তাদের সন্তানরা নাগরিকত্বের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। অনেক ক্ষেত্রেই, অবৈধ অভিবাসী মা-বাবার সন্তানরা জন্মের সঙ্গে সঙ্গে নানা সরকারি সুবিধা যেমন স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও ভবিষ্যতে নাগরিকত্বের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
এ ছাড়া, অভিবাসী শিশুদের নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ায় বিশাল পরিবর্তন আসছে। নতুন নীতি অনুযায়ী, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া যেসব শিশুর বাবা-মায়ের মধ্যে কোনো একজন যদি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা গ্রিন কার্ডধারী না হন, তাদেরকে মার্কিন পাসপোর্ট বা ভিসা প্রদান করা হবে না। দীর্ঘমেয়াদে, এই সিদ্ধান্ত অভিবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে। এই ব্যবস্থা অবৈধ অভিবাসী পরিবারগুলোর জন্য এক ধরনের শাস্তি হিসেবে কাজ করবে।
মন্তব্য করুন