৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২০ জানুয়ারি) তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। ক্ষমতায় আসতে না আসতেই তার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নালিশ দিয়েছে পানামা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শপথ নেওয়ার পর প্রথম ভাষণেই পানামা খাল ফের যুক্তরাষ্ট্রের দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। এ-সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন দিনি। এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বরাবর ট্রাম্পের নামে নালিশ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো।
চিঠিতে তিনি জাতিসংঘ সনদের এটি অনুচ্ছেদ উল্লেখ করেন। এতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের কোনো সদস্য রাষ্ট্র অপর রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করতে কোনো ধরনের হুমকি বা বলপ্রয়োগ করতে পারবে না। এ সময় তিনি বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ করেন।
ট্রাম্প তার ভাষণে বলেন, ট্রাম্পের ভাষ্য হলো, পানামা ১৯৯৯ সালে কৌশলগত জলপথের চূড়ান্ত হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং এর কার্যক্রম চীনের কাছে হস্তান্তরের অভিযোগ রয়েছে। তিনি আর অপেক্ষা করতে চান না। খালের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ পুনর্বহাল তিনি করবেনই। অবশ্য পানামা সরকার ট্রাম্পের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা এটা চীনকে দেইনি। আমরা এটা পানামাকে দিয়েছি এবং আমরা এটা ফিরিয়ে নিচ্ছি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প পানামা খাল নিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন। তার অভিযোগ, মার্কিন জাহাজের সঙ্গে ‘অন্যায্য’ আচরণ করা হচ্ছে। এ খাল ঘিরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের অভিযোগ করছেন ট্রাম্প।
আল জাজিরা লিখেছে, খালটি চীন নিয়ন্ত্রণ করে না। তবে হংকংভিত্তিক করপোরেশন সিকে হাচিসন হোল্ডিংস ১৯৯৭ সাল থেকে ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরের প্রবেশমুখে থাকা খালের দুটি বন্দর পরিচালনা করছে।
পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো কুইন্টেরোও ট্রাম্পের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, পানামা খালের ওপর চীনের প্রভাব নেই।
প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে কৃত্রিম জলপথ পানামা খাল খনন করা হয়েছিল। খালটি দিয়ে বছরে ১৪ হাজার জাহাজ যাতায়াত করে। বৈশ্বিক বাণিজ্যে জলপথটির হিস্যা গড়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মার্কিন কনটেইনারের ৪০ শতাংশই ওই পথে পরিবহন হয়।
এশিয়া থেকে পণ্য আমদানির জন্য খালটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস-এলএনজিসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির জন্যও যুক্তরাষ্ট্র এ নৌপথ ব্যবহার করে।
মন্তব্য করুন