মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার আদেশে সই করেছেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই তিনি এই আদেশে সই করেন। খবর বিবিসি।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আবারও প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বাইরে চলে গেল, যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন নিঃসরণকারী দেশটির জন্য একটি বড় সিদ্ধান্ত। এটি ট্রাম্পের দ্বিতীয়বারের মতো এই চুক্তি ত্যাগের সিদ্ধান্ত।
এর আগে, ২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তিনি প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
২০১৫ সালে প্যারিসে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০০টি দেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি ঠেকাতে একত্র হয়ে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করে।
এর মূল উদ্দেশ্য ছিল: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা। গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ এমন মাত্রায় কমানো, যা প্রকৃতি শোষণ করতে সক্ষম। নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে দরিদ্র দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই চুক্তি কার্যকর না হলে পৃথিবী মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রভাব
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি ত্যাগের কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, প্যারিস চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের পরিপন্থি। এটি আমাদের শিল্পক্ষেত্র এবং কর্মসংস্থানে বাধা সৃষ্টি করবে।
তবে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করছেন। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ কার্বন নিঃসরণকারী একটি দেশের এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা।
বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের পর ২০২১ সালে ক্ষমতায় এসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তিতে ফিরিয়ে আনেন। তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ চিন্তা
প্যারিস চুক্তি ত্যাগ করা সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যান্য দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো শক্তিশালী দেশের অংশগ্রহণ ছাড়া এই লড়াই সফল হওয়া কঠিন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু বিপর্যয় ঠেকাতে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা জরুরি।
মন্তব্য করুন