যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সে ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিন ভয়াবহ এক হামলা চালান এক ব্যক্তি। শুরুতে হামলাকারীকে নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও পরিচয় নিশ্চিতের পর নতুন তথ্য সামনে আসছে।
ওই ব্যক্তি একাই হামলা চালিয়েছিলেন, এমন তথ্যই দিচ্ছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। ভয়াবহ এই হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে প্রাণ হারান শামসুদ্দিন জব্বার নামের ওই ব্যক্তি।
নববর্ষ উদযাপনে জড়ো হওয়ার ভিড়ের ওপর পিকআপ ট্রাক তুলে দেন শামসুদ্দিন। পরে গাড়ি থেকে নেমে চালান নির্বিচার গুলি। এতে ১৫ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হন অনেকে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, আরও বড় পরিকল্পনা ছিল শামসুদ্দিনের। পরিবারকে হত্যা করে আইসিসে যোগ দেওয়ার মতো পরিকল্পনাও ছিল মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক এই সদস্যের।
শুরুতে ভাবা হয়েছিল শামসুদ্দিন অবৈধ অভিবাসী ছিলেন। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পঘেঁষা কর্মকর্তারা সীমান্ত সুরক্ষিত করার আওয়াজ তোলেন। পরে জানা যায়, ৪২ বছর বয়সী শামসুদ্দিন জন্মগতভাবে মার্কিন নাগরিক। তিনি টেক্সাসে জন্মগ্রহণ করেছেন। এমনকি মার্কিন সেনাবাহিনীরও সদস্য ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে এক বছর আফগানিস্তানেও কাটিয়েছেন শামসুদ্দিন।
চুপচাপ থাকা শামসুদ্দিন যে এমনটা করতে পারেন, তা মানতেই পারছে না তার স্বজনরা। জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার ইনফরমেশন সিস্টেমে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করা শামসুদ্দিন মার্কিন সেনাবাহিনীতে ২০০৭ সালে যোগ দেন। ২০১৫ পর্যন্ত তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীর মানব সম্পদ ও আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। চাকরিচ্যুত হওয়ার আগে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আফগানিস্তানে মোতায়েন ছিলেন শামসুদ্দিন।
সেনাবাহিনীতে ঢোকার আগে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন শামসুদ্দিন। টেক্সাসে দুটি মামলায় গ্রেপ্তারও হন তিনি। ২০০২ সালে চুরি এবং ২০০৫ সালে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর জন্য তিনি জরিমানা ও প্রোবেশন পেয়েছিলেন। জানা যায়, শামসুদ্দিন দুবার বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম বিয়ে ২০১২ সালে বিচ্ছেদ হয় এবং দ্বিতীয় বিয়ে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। তবে শামসুদ্দিনের বাবা-মা কি অভিবাসী ছিলেন কি না তা জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন