অল্পের জন্য শাটডাউনের হাত থেকে রক্ষা পেল যুক্তরাষ্ট্র। একটি বিল পাসে ব্যর্থতার জন্য এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে শেষ মুহূর্তে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে এই বিল পাসের ফলে শাটডাউন এড়ানো গেল। এখন ওই বিল সিনেটে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, সিনেটেও ফেডারেল সরকারকে অর্থায়নের জন্য বিলটি পাস হয়েছে। সিনেটে বিলটি পাস হওয়ায় এবার তা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পাঠানো হবে। তিনি তাতে সই করে বিলটি আইনে পরিণত করতে পারবেন। এর ফলে অর্থছাড়ে আর বাধা থাকবে না।
সিনেট শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের পরে বিলটি পাস করেছে। বিলটির পক্ষে বিপক্ষে ভোট ছিল ৮৫ ও ১১। অর্থায়নের সময়সীমার শেষ মুহূর্তে বিলটি পাস হওয়ায় শাটডাউন এড়ানো গেছে। তা সত্ত্বেও দেশব্যাপী ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে জানাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়নের জন্য বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে আনা এই বিলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ভোট দেন। এর মধ্য দিয়ে তারা বিলটি পাসে ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করলেন। বিলটি পাস হতে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় সময় শনিবার থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল, যা ‘শাটডাউন’ নামে পরিচিত।
জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে হোয়াইট হাউসে বসার ঠিক এক মাস আগে বড় ধরনের রাজনৈতিক হোঁচট খেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সমর্থিত একটি রাষ্ট্রীয় অর্থবিল (সরকারি ব্যয় প্যাকেজ) মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সময়মতো পাস হতে ব্যর্থ হয়। স্বল্পমেয়াদি বিলটিতে সমর্থন দেন ১৭৪ আইনপ্রণেতা, বিরোধিতা করেন ২৩৫ জন। বিলটি পাসে সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন ছিল। কংগ্রেস এর আগে একটা দ্বিদলীয় সমঝোতায় পৌঁছেছিল। কিন্তু সেটি প্রত্যাখ্যান করে নতুন বিল প্রণয়নের জন্য নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক রিপাবলিকানদের ওপর চাপ তৈরি করেন। এই বিবাদ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। যার ফলে বড়দিনের ছুটির আগে সরকারি সেবাগুলো বন্ধ কিংবা সীমিত হয়ে পড়তে পারে। জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নিতে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য একটি পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াতে পারে এই নাটকীয় পরিস্থিতি। শাটডাউন এড়াতে ট্রাম্পের আহ্বান শুনে রিপাবলিকানরা যে নতুন বিল আনেন তাতে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে ৩৮ রিপাবলিকানও সায় দেননি।
আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় ভোরে সরকারের ব্যয়সংক্রান্ত তহবিল ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। ফলে সরকারের ব্যয় মেটানোর অর্থ না থাকলে সীমান্ত টহল থেকে শুরু করে ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস (জাতীয় উদ্যান সংস্থা) পর্যন্ত সব ধরনের সেবা শাটডাউন হয়ে যেত। শেষমেশ তা হয়নি। কারণ, কিছু সংশোধনীর পর বিলটি নির্ধারিত সময়ে পাস হয়।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কংগ্রেস তিন মাসের তহবিল বিল পাস করেছে; যা সরকারি শাটডাউন এড়িয়ে কার্যক্রম স্বাভাবিক রেখেছে।
মন্তব্য করুন