ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের পটভূমিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রতি সমর্থনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মার্কিন দেশে বসবাসরত পাঁচ ফিলিস্তিনি নাগরিক।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটনের জেলা আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের অধীনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন মানবাধিকার আইন উপেক্ষা করে ইসরায়েলি সামরিক ইউনিটগুলোকে সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে। এই ইউনিটগুলো গাজা এবং ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত।
মামলার কেন্দ্রে রয়েছে ‘লিহি আইন’, যা অনুযায়ী, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি বা নিরাপত্তা বাহিনীতে মার্কিন সামরিক সহায়তা প্রদান নিষিদ্ধ। এই আইন অনুসারে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, কিন্তু অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, এমন দাবি করেছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, যুদ্ধের ফলে ২৩ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং খাদ্য সংকটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে আক্রমণের পর এই যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৫০ জন অপহৃত হয়েছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
মামলাটি গাজার পাঁচ ফিলিস্তিনির পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন গাজার শিক্ষকও রয়েছেন। মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, ওই শিক্ষক চলমান যুদ্ধে সাতবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তার পরিবারের ২০ জন সদস্যকে ইসরায়েলি হামলায় হারিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যা নজিরবিহীনভাবে বৃদ্ধির পরও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লিহি আইন প্রয়োগে ব্যর্থতা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এই আইনকে উপেক্ষা করার ফলে ফিলিস্তিনিদের বিরাট ক্ষতি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে এবং সাংবাদিকদের বিচার বিভাগে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে। তবে বিচার বিভাগ থেকেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন