মধ্যপ্রাচ্য এখন যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের জন্য অনেকটাই শত্রুমুক্ত। এই দুই বন্ধুর পথে এখন একমাত্র কাঁটা ইরান। যদিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় ধুঁকছে ইরান। তারপরও স্বস্তিতে নেই ওয়াশিংটন ও তেল আবিবের কর্মকর্তারা। তাদের ভয়, যে কোনো সময় ঘুরে দাঁড়াবে ইরান, করবে পাল্টা হামলা। আর তাই ইরানকে নিয়ে নতুন এক ছক কষেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গেল ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন ট্রাম্প। তবে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বেশ কয়েকবার আততায়ী হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি। মার্কিন গোয়েন্দারা দাবি করেছিল, ট্রাম্পের জীবন নিতে মরিয়া ইরান। এমনকি এ নিয়ে তখন তেহরানকে সতর্কও করে দিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। যদিও তেহরান জানায়, ট্রাম্পকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের।
কিন্তু ক্ষ্যাপাটে প্রকৃতির ট্রাম্প ইরানের ওপর বেশ বিরক্ত। মিত্র ইসরায়েলের প্রতি আনুগত্য দেখাতে হলেও ট্রাম্প ইরানে হামলার অনুমতি দিতে পারেন, এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এবার তেমনই এক খবর সামনে নিয়ে এলো প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। খবরে দাবি করা হয়, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির লাগাম টানতে সব ধরনের অপশন মাথায় রেখেছেন ট্রাম্প।
ইসরায়েলের অভিযোগ, পরমাণু অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে ইরান। সেক্ষেত্রে ইরান সফল হলে তা হবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। তাই বন্ধুকে বাঁচাতে মরিয়া ট্রাম্প সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতিই বেছে নিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা বা কূটনীতি নয়, বরং ইরানে আগেভাগে বিমান হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। এভাবেই ইরানের বিষদাঁত ভেঙে দেওয়া সম্ভব বলে বিশ্বাস ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের।
ট্রাম্পের টিমের কিছু সদস্য ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার অপশনকে আগের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। বিশেষ করে সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের পতনের পর। আবার লেবাবন ও ফিলিস্তিনেও ইরানি প্রক্সিরা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলে ইরান অনেকটাই একা হয়ে পড়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও হামলার এমন ভাবনা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।
এর আগের টার্মে ইরানের সবচেয়ে চৌকস সামরিক কর্মকর্তা কাশেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এতে ইরানের যে ক্ষতি হয়েছে তা এখনো পুষিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি। তখন ইরান এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল, ট্রাম্পের মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল তারা। এখন ট্রাম্প ক্ষমতায় বসে আবারও ইরানকে চেপে ধরার সুযোগ পেলে, নিশ্চিতভাবেই তা হাতছাড়া করবেন না।
মন্তব্য করুন