সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হোয়াইট হাউসে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (০৯ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাইডেন সিরিয়ার এ শাসকের পতনকে রাজনৈতিক উত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দেশ পুনর্গঠনের জন্য সিরিয়ার নাগরিকদের ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে। তারা একটি ভবিষ্যৎ সরকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মধ্যপন্থি। তবে বিদ্রোহীরা তাদের এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে কি না তাও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষণ করবে।
তিনি বলেন, সিরিয়ার জনগণের দ্বারা পরিচালিত কর্তৃপক্ষের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পুনর্গঠনে মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ন্যায়বিচারের মৌলিক ফল হলো আসাদ সরকারের পতন। এটি সিরিয়ায় দীর্ঘকাল চলা গৃহযুদ্ধের কারণে ভোগান্তি পোহাতে থাকা জনগণের জন্য ঐতিহাসিক একটি মুহূর্ত।
মস্কোতে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া বাশারের পরিণতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আসাদকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।
এদিকে আল জাজিরার জানিয়েছে, সিরিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এ ঘাঁটিতে ৯০০ মার্কিন সেনা রয়েছে। তারা আসাদের পলায়নের দিনও জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএলের অবস্থানকে নিশানা করে অন্তত ৭৫ হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় তাদের ক্যাম্প ও অভিযানকে নিশানা করা হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সেন্টকম কমান্ডার মাইকেল কুরিলা বলেন, সিরিয়ার সমস্ত সংস্থার জানা উচিত, তারা যদি আইএসআইএল (আইএসআইএস)-এর সাথে অংশীদরত্ব করে বা সমর্থন করে তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের জবাবদিহি করবে।
উল্লেখ্য, বাবা হাফিজ আল বাশাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে বাশার আল আসাদের শাসনকাল শুরু হয়। প্রথমে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তী সময়ে বাবার মতোই কর্তৃত্ববাদী শাসক হয়ে ওঠেন তিনি। বাশার আসাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিরোধীদের ওপর দমনপীড়নের। এর আগে ২০১১ সালে আরব বসন্ত ঘিরে বাশার আসাদের ক্ষমতার মসনদ নড়ে উঠেছিল।
কিন্তু সে যাত্রায় রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনে ক্ষমতায় টিকে গিয়েছিলেন বাশার আসাদ। এবার অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। রাশিয়া ও ইরান আগেই তাদের সামরিক উপস্থিতি কমিয়ে ফেলে। এরপরই হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের গ্রুপ মাত্র ৩টি শহর দখল করে নেওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালাতে হয় বাশার আসাদকে। গোপনে প্লেনে চড়ে ছাড়তে হয় মাতৃভূমিও।
মন্তব্য করুন