ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় দফায় হারের পর সদ্য সমাপ্ত মার্কিন নির্বাচনে আবারও প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান এই নেতা। এরপরই তার সম্ভাব্য পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
তবে ট্রাম্পের শাসনের মূলনীতি আগের মতোই আছে, যা ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি নামে পরিচিত। আবারও ট্রাম্প এই নীতি নিয়ে হোয়াইট হাউসে ফেরায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তনের আভাস অনুভব করছেন বিশ্লেষকরা।
বলা হচ্ছে, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেশের অভ্যন্তরে বেশি মনোযোগী হয়ে উঠতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। নির্বাচনি প্রচারণায় ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে দেশের বাইরে নিজেদের সম্পৃক্ততা কমিয়ে আনা। এমনটা হলে মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীরা নতুন করে ভূরাজনীতিতে প্রভাব বাড়ানোর একটি সুবর্ণ সুযোগ খুঁজে পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরেই চীনকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। দেশটির বিষয়ে এরই মধ্যে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন ট্রাম্প। জানান, ভবিষ্যতে চীনা পণ্যের ওপর ৬০ ভাগ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করতে পারেন তিনি। চীনকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে এমন বাণিজ্যনীতি প্রণয়ন করতে চান নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পের যুদ্ধবিরোধী অবস্থান থেকে বোঝা যায়, সামনের দিনগুলোতে ইউক্রেনে সামরিক সহযোগিতা কমিয়ে আনতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপ নিয়ে এমন অবস্থানের বিপরীতে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য ছিল, নেতানিয়াহু সঠিক কাজটিই করছেন৷
ইরান নিয়েও নিজস্ব পরিবকল্পনা করছেন ট্রাম্প। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে দূরে রাখতে তেহরানের অর্থনীতির উপর আঘাত হানতে চান তিনি। অক্টোবরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তার আমলে কেউ ইরানের কাছ থেকে তেল কেনেনি। কিন্তু বাইডেনের আমলে তেল বিক্রি বাবদ ইরানের ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় রয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই প্রতিবেশী দেশ মেক্সিকো ও কানাডার সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করতে পারেন। প্রতিবেশী এই দুই দেশের পণ্যের ওপর ২৫ ভাগ শুল্ক আরোপ করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়াও ট্রাম্পের প্রথম বছরে ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠাতে পারে ওয়াশিংটন।
মন্তব্য করুন