গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পেশ করা প্রস্তাবে আবারও ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (২০ নভেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১৪টি দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতা করে প্রস্তাবটি আটকে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস হলে গাজার হামাস যোদ্ধারা আরও উৎসাহিত হবে এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি জটিল হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট উড বলেন, ‘এই প্রস্তাব হামাসকে ভুল বার্তা দেবে। আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা না হলে জিম্মি উদ্ধারের পথ আরও কঠিন হয়ে উঠবে।’
যুদ্ধবিরতি এই প্রস্তাবে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএর কার্যক্রম সহজ করার কথা বলা হয়েছিল।
একইসঙ্গে অবিলম্বে, নিঃশর্ত এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র একমাত্র স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ভেটো দিয়ে প্রস্তাবটি আটকে দেয়।
গাজা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চেষ্টা চললেও যুক্তরাষ্ট্রের এই ভেটোকে সংকট সমাধানের পথে বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে বিশ্লেষক ক্রিস হেজেস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধবিরতিকে স্থায়ী নয়, বরং হামাসের জন্য সুবিধাজনক বলে মনে করছে।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ওমর বাদ্দার বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে যে, যুদ্ধ শেষ করার জন্য বাইডেন প্রশাসন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা আদৌও সত্যি নয়।
তিনি আরও বলেন, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন আমেরিকান নীতিকে আরও ফিলিস্তিনবিরোধী করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, ট্রাম্প যাদের নিয়োগ দিয়েছেন তারা সবাই কট্টরপন্থি বা চরমপন্থি হিসেবে পরিচিত।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৪ হাজার বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী ও শিশু। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ১৭ হাজার শিশু নিহত হয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে এটি ছিল চতুর্থবারের মতো গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো। এমন সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে শান্তি আলোচনায় নতুন করে বিভাজন সৃষ্টি করেছে।
মন্তব্য করুন