রাষ্ট্রীয় গোপন নথি নিজের কাছে রাখার অভিযোগে মায়ামির একটি আদালতে তোলা হয়েছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
আদালতের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানায়, মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকেল ৩টার দিকে ট্রাম্প এবং তার সাবেক সহযোগী ওয়াল্ট নওটার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। আত্মপক্ষ সমর্থনে ট্রাম্প নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। শুনানির সময় আদালতে ক্যামেরা ও লাইভ সম্প্রচার নিষিদ্ধ ছিল।
বিবিসি জানায়, ট্রাম্প আদালতে প্রবেশের পর বিচারক জনাথন গুডম্যান সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনা ৩৭টি অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো আদালতে দাঁড়ালেন ট্রাম্প। এর আগে এপ্রিলে নিউইয়র্কের আদালতে তার বিরুদ্ধে পর্নো তারকাকে টাকা দিয়ে চুপ করানোর অভিযোগ আনা হয়। মঙ্গলবার তাকে ফৌজদারি অভিযোগে আদালতে তোলা হলো।
মায়ামির আদালতের বাইরে ট্রাম্প সমর্থকদের জমায়েত ঘটে। তারা ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগানখচিত টুপি পরে ‘মায়ামি ফর ট্রাম্প’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় এক ব্যক্তি ‘ইউএসএ! ইউএসএ!’ বলে চিৎকার করছিলেন।
মায়ামির মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজ গণমাধ্যমকে জানান, এখানে নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা হয়নি।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার কথা মাথায় রেখে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের সমাগমের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
ট্রাম্প নিজেকে বারবার নির্দোষ দাবি করে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে বাইডেন প্রশাসনের ষড়যন্ত্র বলে আসছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথকে ‘ট্রাম্প হেটার’ বলে সম্বোধন করেছেন।
আদালতে বিচারকদের দেওয়া অভিযোগপত্রের বরাতে রয়টার্স জানায়, স্মিথ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ফ্লোরিডায় মার-আ-লাগো রিসোর্ট ও নিউ জার্সিতে গলফ ক্লাবে গোপন রাষ্ট্রীয় নথি এলোমেলোভাবে স্তূপ করে রাখার অভিযোগ এনেছেন।
এ সময় আদালতে পেশ করা ছবিতে দেখা যায়, বলরুমের স্টেজ, বাথরুম, স্টোররুমের মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় নথি।
অভিযোগে বলা হয়, ট্রাম্প কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এসব নথি পুনরায় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এদিকে নথি সরানোয় ট্রাম্পকে সহযোগিতার অভিযোগ তোলা হয়েছে ওয়াল্ট নওটার বিরুদ্ধে। তিনি হোয়াইট হাউস এবং মার-আ-লোগোতে ট্রাম্পের সঙ্গে কর্মরত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট তার মেয়াদ শেষ হলে অফিস ছাড়ার পর প্রেসিডেন্সিয়াল নথি জাতীয় সংরক্ষণাগারে রাখার কথা। এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক একজন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কী করে এমনটা ঘটতে পারে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, এটি আমেরিকার ইতিহাসের জন্য একটি কালো দিন। আমাদের দেশ এখন দ্রুত অধপতনের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা একসঙ্গে আবার আমেরিকাকে শ্রেষ্ঠ করে তুলব!
মন্তব্য করুন