গণতন্ত্রের মোড়লখ্যাত যুক্তরাষ্ট্রে ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নিয়ে সারা বিশ্বে সৃষ্টি হয় টানটান উত্তেজনা। নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ভরাডুবি হয় ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের। দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩১ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন তিনি। এদিকে নিয়ম মেনে ২০ জানুয়ারির মধ্যে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হবে বাইডেনকে। দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে কমলা হ্যারিসকেও।
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কমলা হ্যারিসের স্থলে ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন ওহাইওর সিনেটর জে ডি ভ্যান্স। যুক্তরাজ্য বা অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো মার্কিন শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ‘বিরোধীদলীয় নেতা’র মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ নেই। এ কারণে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর কমলা হ্যারিস তার সব সরকারি দায়-দায়িত্ব থেকে পুরোপুরি অব্যাহতি পেতে যাচ্ছেন। তবে পরাজয় স্বীকার করে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে তিনি হাল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বলেছেন, প্রাপ্য মর্যাদার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।
ভোটের পরদিন বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অশ্রুসিক্ত সমর্থকদের উদ্দেশে কমলা বলেন, ‘ভোটে পরাজয় মেনে নিচ্ছি। তবে লড়াই ছাড়ছি না।’ তিনি নারীর অধিকার ও বন্দুক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এবং ‘সকল মানুষের প্রাপ্য মর্যাদার জন্য লড়াই করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ট্রাম্পকে ফোন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন কমলা।
তিনি বলছিলেন, ‘এই নির্বাচনের ফল আমরা যেমনটি চেয়েছিলাম তেমন নয়, আমরা যা চেয়েছিলাম তা নয়, আমরা যেটির জন্য ভোট দিয়েছি সেটি নয়। তবে আমি বলছি শুনুন, আমার কথা শুনুন: আমেরিকার প্রতিশ্রুতির আলো সর্বদা জ্বলবে।’
সমর্থকদের, বিশেষ করে তরুণদের উদ্দেশে কমলা বলেন, ‘কখনো কখনো লড়াই কিছুটা সময় নেয়। এর অর্থ এই নয় যে, আমরা জিতব না।’
তিনি বলেন, ‘আমি জানি, অনেকেরই মনে হচ্ছে আমরা অন্ধকার সময়ে প্রবেশ করছি। আমি আশা করি এমনটি হবে না। তবে যদি তা হয়, আসুন আমরা আকাশকে আলো দিয়ে পূর্ণ করি—কোটি কোটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলো…আশাবাদ, বিশ্বাস, সত্য ও সেবার আলো দিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন একে অপরের হাত ছেড়ে দেওয়ার সময় না, বরং ধৈর্য ধরার সময়।’
মন্তব্য করুন