যুক্তরাষ্ট্রে ইতিহাস সৃষ্টির এ নির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছেন কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজে মসনদে বসার এই লড়াইয়ে কমলাকে পাড়ি দিতে হয়েছে দীর্ঘপথ। একে তো ভারতীয় বংশোদ্ভূত, তার ওপর আবার নারী, সব মিলিয়ে এবারের মার্কিন নির্বাচন, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আলাদা। এর আগে এ অসাধ্য সাধন করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন, হিলারি ক্লিনটন।
কমলার পুরো নাম কমলা দেবী হ্যারিস। তার মা শ্যামলা গোপালন ছিলেন ক্যানসার গবেষক। তিনি ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। কমলার বাবা ডোনাল্ড হ্যারিসও অভিবাসী হিসেবে জ্যামাইকা থেকে মার্কিন মুলুকে আসেন। অভিবাসী পরিবারের সন্তান কমলা ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তবে কমলা ছোট থাকতেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় তার বাবা-মায়ের।
২০১০ সালে কমলা ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি হিসেবে দুই দফা দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আইনি কর্মকর্তা থাকাকালেই ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক হয়ে ওঠেন কমলা। এসময় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যেও কমলার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার জুনিয়র ইউএস সিনেটর নির্বাচনে জয় পান তিনি।
জো বাইডেনের রানিং মেট হিসেবে ২০২০ সালে আলোচনার শীর্ষে ছিলেন কমলা। পরে কমলাকে নিজের রানিং মেট হিসেবে পেয়ে সম্মানিত বোধ করার কথা জানিয়ে টুইট করেছিলেন বাইডেন। কমলার বাবা-মা বিভিন্ন নাগরিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাদের পাওয়ার কাপল হিসেবে সম্বোধন করতেন সহপাঠীরা। তবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের পর মায়ের কাছেই কেটেছে কমলা ও তার বোনের শৈশব-কৈশোর।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কমলা জানান, নিজের এমন সাহসী মনোভাবের পেছনে রয়েছেন তার মা শ্যামলা। তবে দীর্ঘ ক্যানসারে ভুগে ২০০৯ সালে তার মা মারা যান। মায়ের মৃত্যুর আরও কয়েক বছর পর, অর্থাৎ ২০১৪ সালে (ইহুদি) ডগলাস এমহফের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কমলা।
ছাত্রজীবন থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীগত সম্পর্কের মতো রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে সোচ্চার ছিলেন হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রের ৬০তম নির্বাচনে তীব্র চাপের মুখে পড়ে জো বাইডেন নিজে সরে গিয়ে কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্রেটিক দলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদপ্রার্থী ঘোষণা করলে ট্রাম্পের সাথে লড়াইয়ে মেতে ওঠেন কমলা। আর তাই এবার সারা বিশ্ব অপেক্ষায়, ভারতীয় বংশোদ্ভুত এই নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে কী পারবে না!
মন্তব্য করুন