কথায় ও কাজে বেশ ক্ষ্যাপাটে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর, মনে করা হয়েছিল, তিনি ওলট-পালট করে দেবেন পুরো পৃথিবী। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর বড় কোনো যুদ্ধের ঘটনাই ঘটেনি। উল্টো বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের অধীননেই একের পর এক যুদ্ধে জড়িয়েছে বিশ্ব। ইউক্রেন যুদ্ধের পর এখন মধ্যপ্রাচ্যও জ্বলছে হিংসার আগুনে। তাই শ্বাসরুদ্ধকর এই সময়ে সারা বিশ্বের প্রশ্ন, শেষমেশ কার গদি নিশ্চিত হতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউসে।
চারদিকে এখন গুঞ্জন চলছে আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ফিরবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সমর্থকদের কাছে এটি বেশ আনন্দ এবং উত্তেজনার হলেও অনেকের কাছেই তা হতে যাচ্ছে আতঙ্কের। প্রশ্নটা তাই থেকেই যায়, কেন এই ভীতি কাজ করছে তাদের মধ্যে? নির্বাচনে জিতলে কী ঘটতে যাচ্ছে আর হারলেই বা কী হতে যাচ্ছে তা নিয়েই চলছে ব্যাপক আলোচনা। পুরো আমেরিকার অপেক্ষায় কী ঘটতে যাচ্ছে? ট্রাম্প কি আসলেই এক আতঙ্কের নাম?
ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলেই তার ঘোষণা শুরু হবে এক প্রতিশোধের উল্লাস নিয়ে। তিনি ইতিমধ্যেই আভাস দিয়েছেন, যারা তাকে অপমান করেছেন তারা এবার পেতে যাচ্ছেন শাস্তি। এর তালিকায় তিনি রেখেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাউডেন এবং সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। এবং আতঙ্কের বিষয় হলো, তিনি এই প্রতিশোধ নিতে তিনি সেনাবাহিনী এবং ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহারের কথাও বলেছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তার এই প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব কেবল ব্যক্তিগত নয়, বরং জাতীয় স্তরেই এক বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। তারা এটাও মনে করছেন যে, ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে অভিবাসন নিয়ে করা তার কড়া মন্তব্য। এ ছাড়া জলবায়ু নিয়ে নীতিগত অবজ্ঞাও এক বিরাট আতঙ্কের কারণ হতে পারে বলে জানা গেছে। আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক ধার্য করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প, এমনটাও শোনা গেছে, যা মার্কিন অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তার এসব মনোভাবের কারণেই তার দেওয়া ভাষণ ‘মেইক আমেরিকা গ্রেইট এগেইন’কে ’মেইক আমেরিকা পুওর এগেইন’ বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। তবে তিনি জয়ী হওয়ার পেছনে যেমন এক আতঙ্ক কাজ করছে, তেমনি আতঙ্ক কাজ করছে তার হারের পেছনেও।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি নির্বাচনে হেরে গেলে আমেরিকার জন্য অপেক্ষা করছে ভিন্ন এক গৃহযুদ্ধ। তারা মনে করছেন, তিনি জয়ী না হলে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলতে পারেন এমনকি এর জন্য শুরু করতে পারেন আইনি লড়াইও। হাড্ডাহাড্ডি এই লড়াই তাই এখন শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য নতুন এক অধ্যায় হয়ে থাকতে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন