মার্কিন নির্বাচনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদন ইলেক্টোরাল কলেজ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা জনগণের ভোটের সরাসরি নির্বাচিত হতে পারেন না। তাদের জয় পরাজয় নির্ভর করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের ওপর। দেশটিতে ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মোট ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে ৫৩৫টি। এর বাহিরে রাজধানী ডিস্ট্রিক অব কলম্বিয়া বা ওয়াশিংটন ডিসির জন্য নির্ধারিত ৩টি ইলেক্টোরাল ভোট।
সর্বমোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল কলেজের মধ্যে যে প্রার্থী ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে। এখন প্রশ্ন হল ইলেক্টরাল ভোট দেওয়ার জন্য ইলেক্টররা কীভাবে নির্বাচিত হন?
কোন অঙ্গরাজ্যে কত ইলেকটোরাল ভোট থাকবে, তা নির্ধারিত হয় সেখানে কতটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে তার ওপর। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের একেকটি কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধির জন্য একটি করে ভোট এবং প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে দুজন প্রতিনিধির জন্য দুটি ভোট বরাদ্দ থাকে।
প্রতিনিধিদের অনুপাতের ইলেক্টোরাল কলেজ নির্ধারিত হলেও মূল নির্বাচনে নিম্নকক্ষের প্রতিনিধি, সিনেটর বা রাজ্যটির গভর্নর কেউই ইলেক্টোরাল ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। এর জন্য সম্পূর্ণ আলাদা একটি দলকে নির্বাচন করা হয়।
ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের জন্য প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয় দুই ধাপে। এরমধ্যে প্রথম ধাপটি রাজনৈতিক দলগুলোর নিয়ন্ত্রণে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রতিটি দলের পক্ষ থেকে তাদের মনোনীত ইলেকটোরাল ভোটারের তালিকা জমা দেওয়া হয়, যাকে স্লেট বলে। দলগুলোর অভ্যন্তরীণ নির্বাচনের মাধ্যমে এসব প্রতিনিধি নির্ধারণ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে এসব প্রতিনিধিদের ভোট প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয় সাধারণ ভোটারদের হাতে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সাধারণ ভোটাররা যখন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন তখন মূলত তারা ওই প্রার্থীর নির্বাচনী দলের ইলেকটোরাল ভোটারের স্লেটকে নির্বাচন করেন। অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যেই যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জয়ী হন, তার দলের স্লেটটিই ইলেকটোরাল ভোটার হিসেবে নির্বাচিত হয়। এর মধ্যে ব্যতিক্রম শুধু মাইন ও নেব্রেস্কা অঙ্গরাজ্য। এতে উইনার টেক অল নীতি কার্যকর নয়। বরং এখানে ডিস্ট্রিক গুলোর হাতেও ইলেক্টোরাল ভোট থাকে।
সাধারণ ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত ইলেকটোরাল কলেজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোট দিয়ে থাকে। সাধারণ নির্বাচনের পর ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বুধবারের পরের প্রথম সোমবার এই ইলেকটোরাল ভোটাররা সভায় বসবেন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য নিজেদের ভোটটি আলাদা ব্যালটের মাধ্যমে দেন।
পরবর্তী ৬ জানুয়ারি এই ভোট গণনার জন্য কংগ্রেস চেম্বারে সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যমান ভাইস প্রেসিডেন্টের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সে সভায় ভোট গণনার পর নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল জানা যায়।
মন্তব্য করুন