হাতে সময় আছে এক সপ্তাহের কম। তারপরই মার্কিন মুলুকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যদিও দেশটিতে ইতোমধ্যেই আগাম ভোটাভুটি শুরু হয়ে গেছে। তবে বিশ্বের সবার নজর এখন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। এই নির্বাচনে বদলে যেতে পারে অনেকের ভাগ্য। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানো প্রার্থীদের ভাগ্য ঝুলছে কার হাতে। বলা হচ্ছে, দেশটির শেয়ারবাজারের দিকে তাকালেই না কি বোঝা যাবে, কে হচ্ছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওই নির্বাচনে কে জয়ী হবেন, তা আগে থেকে বলার কোনো সুযোগ নেই। তবে ভোটের আগে বিভিন্ন জরিপ থেকে একটা ধারণা পাওয়া যায়। যদিও নির্বাচনটা মার্কিন মুলুকের বলে হয়ত, জরিপের ফলও ব্যালটে উল্টে যেতে পারে। আর তাই এ নিয়ে কিছু মডেলও রয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, গেল কয়েক দশকের মধ্যে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এক নির্বাচন দেখতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস না সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, কে হবেন, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট তা জানতে আরও প্রায় সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করতে হবে। তবে মার্কিন শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি কেমন, তা দেখেই না কি বোঝা যায়, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী কে জয়ী হবেন। অতীতেও এমন নজির রয়েছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক থেকেই নাকি এমন অগ্রিম ধারণা পাওয়া গেছে বলে বিশ্লেষণ করেছে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান এলপিএল ফাইন্যান্সিয়াল।
সর্বশেষ ১৫টি নির্বাচনের ১২টিতেই দেখা গেছে, ভোটের দিনের তিন মাস আগে থেকে যদি শেয়ারবাজারের ঊর্ধ্বগতি থাকে, তাহলে হোয়াইট হাউস ক্ষমতাসীনদের হাতছাড়া হয় না। বাজারে নেতিবাচক পরিস্থিতি থাকলে নির্বাচনে হারে ক্ষমতাসীন দল। ৯টি নির্বাচনের মধ্যে ৮টির ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা গেছে। পূর্বাভাস দেওয়ার যত মডেল আছে, সেগুলোর বিবেচনায় এর ট্র্যাক রেকর্ড খারাপ বলা যাবে না।
আগস্ট মাসের শুরুর দিকের তুলনায় এখন পর্যন্ত এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। সুতরাং আগামী কয়েক দিনে যদি নাটকীয় কিছু না ঘটে এবং শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন না ঘটে, তাহলে ঐতিহাসিক এই ধারা কমলা হ্যারিসের পক্ষেই যাবে। তবে একটা কিন্তু আছে। বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে শেয়ারবাজারের ভালো করাকে এক করে দেখছেন না ভোটাররা।
মার্কিনিদের প্রায় ৬১ শতাংশ কোনো না কোনো শেয়ারের মালিক। তবে বিপুলসংখ্যক ভোটারের শেয়ারবাজারে সরাসরি কোনো অংশগ্রহণ নেই। গেল সপ্তাহে অ্যাসোসিয়েট প্রেস– এনওআরসি সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স রিসার্চের একটি জরিপে দেখা যায়, নিবন্ধিত ভোটারদের ৬২ শতাংশই অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি খারাপ বলে বর্ণনা করেছেন। তাদের একটি বড় অংশ অবশ্য রিপাবলিকান পার্টির ভোটার কিংবা দলনিরপেক্ষ।
এতকিছুর পরও অবশ্য কমলার সামনে বড় সুযোগ রয়েছে। অর্থনীতির বিষয়গুলো ডেমোক্র্যাটরা ভালোভাবেই সামাল দিতে পারবে এমনটাই বিশ্বাস অনেক ভোটারের। এর মাধ্যমে যে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তা হচ্ছে, অর্থনীতির এ দিকটাতে ট্রাম্পের সুবিধাজনক অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে। অর্থাৎ ভোটাররা সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে এ ক্ষেত্রে আর অতিরিক্ত যোগ্য মনে করছেন না।
মন্তব্য করুন