হারিকেন মিল্টনের শক্তি কিছুটা কমেছে। এটি এখন এক ধাপ কমে চার ক্যাটাগরির ঝড়ে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বুধবার (৯ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শক্তি কমলেও হারিকেনটির ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি অব্যাহত রেখেছে ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার। তারা বলেছে, ঝড়টি এখনও অত্যন্ত বিপজ্জনক।
এনএইচসির সর্বশেষ বার্তায় বলা হয়, হারিকেনের বাতাসের গতি ১৫৫ মাইলে (২৫০ কিলোমিটার) এসে ঠেকেছে। যা ক্যাটাগরি-৫ মাত্রায় থাকা অবস্থার চেয়ে মাত্র দুই মাইল কম। ১৩১ থেকে ১৫৫ মাইল গতির ঝড়কে ক্যাটাগরি-৪ এবং ১৫৫ মাইলের বেশি গতিবেগ থাকলে তা ক্যাটাগরি-৫ মাত্রায় ধরা হয়।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, হারিকেন মিল্টনের কেন্দ্রটি আজ মেক্সিকোর পূর্ব উপসাগর জুড়ে তাণ্ডব চালাবে। গভীর রাতে বা বৃহস্পতিবার ভোরে ফ্লোরিডার পশ্চিম-মধ্য উপকূল বরাবর আঘাত হানতে পারে। এরপর পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে ফ্লোরিডার পূর্ব উপকূল থেকে ধীরে ধীরে সরে যাবে। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়ার আশা করা হচ্ছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এর প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, প্রবল বাতাস এবং সম্ভাব্য ঝড়-বৃষ্টির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মিল্টন প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে এই অঞ্চলে আঘাত হানার সবচেয়ে খারাপ ঝড় হতে পারে। এর প্রভাবে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে দেড় ফুট পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এদিকে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যটির বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তারা যে যার মতো হারিকেন মিল্টনের সম্ভাব্য আঘাত হানার অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্লোরিডার ৫১টি শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় স্কুল-কলেজ। অঙ্গরাজ্যটির গভর্নর রন ডিসানটিসের তথ্য মতে, হারিকেনটি খুব কাছে অবস্থান করছে।
ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে মঙ্গলবারই সম্ভাব্য বিপর্যয়কর ঝড়ের ক্রমবর্ধমান কঠোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এরপরই সঙ্গে সঙ্গে বাসিন্দারা ফ্লোরিডা ছেড়ে যেতে শুরু করেন। কেউ ব্যক্তিগত গাড়ি, কেউ দলবেঁধে আবার কেউ পরিবহন যানে করে এলাকা ছাড়ছেন। গাড়ির চাপ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে। এমনকি কোনো কোনো এলাকায় তীব্র যানজট মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।
তবে কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে মানুষ এভাবে যেন ঝড়ের সম্ভাব্য অঞ্চল ছেড়ে চলে যান। কারণ, বিপুল বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া এবং আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা দেওয়া অসম্ভব। স্থানীয়ভাবে কেবল ৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা গেছে। গভর্নর ডিসানটিস বাসিন্দাদের নিচু এলাকা থেকে দূরে সরে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে যারা মোবাইল বাড়িতে (অস্থায়ীভাবে নির্মিত বাড়ি) থাকেন তাদের অবশ্যই নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন। কারণ, ঝড়ের গতির কাছে পাকা ঘরও ভেঙে পড়তে পারে।
তিনি বলেছেন, স্থানীয়দের বিকল্প এবং উঁচু এলাকায় চলে যেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, ওই বিকল্প আশ্রয়ও যেন ক্যাটাগরি-৩ বা ক্যাটাগরি-৪ হারিকেনের শক্তি সহ্য করতে পারে।
মন্তব্য করুন