যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। এর কাজ সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা। এই সংস্থাটি সম্প্রতি একটি নতুন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে, যেখানে গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার (২ অক্টোবর) বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স, ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রাম, লিঙ্কডইনে। পাশাপাশি তা ডার্ক ওয়েবেও ছাড়া হয়েছে বিজ্ঞাপনটি।
এ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশ করা এসব বার্তায় গোয়েন্দা সংস্থাটির সঙ্গে নিরাপদে যোগাযোগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে আগ্রহী ব্যক্তিদের নাম, স্থান ও যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া থেকেও গুপ্তচর সংগ্রহের জন্য একই ধরনের প্রচারণা শুরু করেছিল সিআইএ। এতে সাফল্য পাওয়া গেছে বলে জানায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটি। সিআইএর একজন মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেন, তারা অন্যান্য কর্তৃত্ববাদী দেশের মানুষদের নিশ্চিত করতে চায়, এ নিয়ে তাদের ব্যবসার দরজা খোলা।
জানা যায়, সিআইএ চীন, ইরান ও উত্তর কোরিয়া থেকে গুপ্তচর নিয়োগের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়। নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু বার্তা মান্দারিন, ফরাসি ও কোরীয় ভাষায় তারা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করেছে বলে জানা যায়। বুধবার প্রকাশ করা এসব বার্তায় গোয়েন্দা সংস্থাটির সঙ্গে নিরাপদে যোগাযোগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সিআইএর এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সিউলের হানকুক ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজের আন্তর্জাতিক রাজনীতির সহযোগী অধ্যাপক ম্যাসন রিচি জানান, ইউটিউব বা অন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে এ ধরনের নিয়োগ প্রচেষ্টাটি মূলত এটিই প্রথম বলে ধারণা করছেন। তিনি আরও জানান, অন্তত কোরিয়ায় এমনটি হয়েছে বলে তার জানা নেই।
এ পদ্ধতিতে রাশিয়ার ক্ষেত্রে সফল হওয়ায় তারা আবার এমনটি করছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু এটা উত্তর কোরিয়ায় কতটা কার্যকর হবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কারণ দেশটির অধিকাংশ মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই বলে জানায় এই অধ্যাপক।
তবে অধ্যাপক রিচির ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার সেসব ব্যবসায়ীকে নিশানা করছে, যারা অনানুষ্ঠানিকভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চীনে প্রবেশ করতে পারেন। এতে করে তারা সম্ভবত ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কে প্রবেশের সুযোগ পান। সিআইএর উপপরিচালক ডেভিড কোহেন ব্লুমবার্গকে এ নিয়ে জানান, চীনে বিপুলসংখ্যক মানুষের তথ্যে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে, যারা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট।
মন্তব্য করুন