শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচন প্রসঙ্গে আবারও কথা বললেন ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে রাজনৈতিক মহলে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু হলো নির্বাচন প্রসঙ্গ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনপিআরের মুখোমুখি হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে এ বিষয়ে জবাবও দিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনপিআরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এ সাক্ষাৎকার দেন প্রধান উপদেষ্টা।

এর আগে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাপানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনএইচকে নির্বাচন প্রসঙ্গে তার সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। সেখানে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।

সোমবার প্রকাশিত এনপিআরের সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূসের কাছে জানতে চাওয়া হয় যে সেনাবাহিনী বলছে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ হবে ১৮ মাস। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো নভেম্বরে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। এমন পরিস্থিতে আপনার জন্য ১৮ মাস সময় পর্যাপ্ত কিনা।

এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানুষ এই সংখ্যাগুলো ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। যত মাস বা বছর প্রয়োজন জনগণ দিতে প্রস্তুত রয়েছে। কেউ কেউ আবার বলছে যে এটি দ্রুত করা উচিত, কারণ আপনি যদি দীর্ঘ এবং দীর্ঘায়িত করেন তাহলে আপনি অজনপ্রিয় হবেন এবং সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাবে। অবার কেউ কেউ বলছে, না, আপনাকে সংস্কার শেষ করতে হবে। সুতরাং আপনি এই দীর্ঘ সময় ধরে থাকুন। কারণ আমরা সবকিছু ঠিক না করে বাংলাদেশ ২.০ এ যেতে চাই না। তাই এই নিয়ে বিতর্ক চলছে।

তিনি বলেন, সংস্ককরণ ২ অর্থ এটাই। আমরা পুরোনো স্টাইলে ফিরে যেতে চাই না। তাহলে এত জীবন দেওয়ার কী অর্থ থাকল। এর কোনো মানে নেই। কারণ আমরা যা করেছি, সবকিছু ধ্বংস করেছি। তাই আমাদের একটি নতুন নির্মাণ শুরু করতে হবে।

এ সময় তাকে প্রশ্ন করা হয় যে বিষয়গুলো খুব চ্যালেঞ্জিং। তখন তিনি বলেন, বিষয়টি আপনি নেতিবাচক আকারে দেখলেও আমি ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি। জাতি একটি বিরাট সুযোগ পেয়েছে। কখনও কখনও দেশর সব মানুষ একটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ যে আমাদের পরিবর্তন দরকার।

সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন যে গত গ্রীষ্মে যখন আপনার সঙ্গে কথা বলছিলাম তখন আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা বিচারাধীন ছিল। আর এখন আপনি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ঘটনার এ পালাবদলে নিজের এ অবস্থানে আপনার অনুভূতি কী?

ড. ইউনূস বলেন, খুবই অদ্ভুতভাবে ঘটনার পালাবদল হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে আমি প্যারিসে ছিলাম। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাব কি না, বা গেলে আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না তা নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলাম। কেননা তিনি (শেখ হাসিনা) আমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। আমাকে তিনি জেলে পাঠাবেন। ফলে আমি দেরিতে ফেরার চিন্তা করছিলাম। তখনই আমি বাংলাদেশ থেকে কল পেলাম যে তিনি চলে গেছেন। আমরা চাই, আপনি সরকারপ্রধান হন। এটি বড় অবাক করার বিষয় ছিল।

সাংবাদিক তখন তার কাছে জানতে চান যে ফোন পাওয়ার পর তখন আপনার কী মনে হয়েছিল? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমি ভেবেছিলাম এমন জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমার আদৌ দেশ পরিচালনায় যুক্ত হওয়া উচিত কিনা। কিন্তু যখন ছাত্ররা আমাকে ডেকে পরিস্থিতি কী তা ব্যাখ্যা করল, অবশেষে আমি বললাম, হ্যাঁ, তোমরা এর জন্য জীবন দিয়েছো। তোমরা যদি জীবন দিতে পার তাহলে আমি আমার অন্যান্য বিবেচনা দূর করে তোমাদের সহযোগী হতে পারি। আমি তা করব।

প্রতিশোধপরায়ণতার মানসিকতা থেকে সংস্কারের দিকে মানুষের নিয়ে যেতে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিশোধের সময়মাত্র কয়েক সপ্তাহ ছিল। কিন্তু তারপর স্বাভাবিকতা ফিরে আসতে শুরু করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশে বিক্ষোভ আছে, কিন্তু এটি প্রতিশোধমূলক বিক্ষোভ নয়। বেশিরভাগ বিক্ষোভ বেতন বৃদ্ধি বা চাকরির দাবিতে, যা তাদের সরকার কর্তৃক আগে থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাই তারা বলেছিল, অতীতের সরকার আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করেছে এবং আমরা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ায় বিনা কারণে আমাদের চাকরি হারিয়েছি। পরে আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি যে ১৫ বছরের অভিযোগ মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে আমরা সমাধান করতে পারি না। আমাদের কিছু সময় দিন যাতে আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারি। আপনারা কঠিন সময়ের মধ্যে গেছেন। আমাদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিষয়টি সমাধান করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মানুষ বিপ্লবের মেজাজে আছে। সুতরাং এটি একটি বিপ্লবী পরিস্থিতি।

ইউনূস বলেন, আপনি যখন বলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হচ্ছে, তখন সেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায় তার সঙ্গে যুক্ত ছিল। সুতরাং আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না যে তারা শেখ হাসিনার অনুসারী হওয়ার কারণে তাদের ওপর হামলা হয়েছে নাকি তারা হিন্দু বলে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু তাদের ওপর হামলা হয়েছে, এটা নিশ্চিত। তবে সরকার শান্তি প্রতিষ্ঠায় চেষ্টা করেছে। আমরা সবাইকে বলেছি যে, আমাদের মতভেদ থাকতে পারে। এর মানে এই নয় যে আমাদের একে অপরকে আক্রমণ করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উইন্ডিজের প্রতিরোধ ভেঙে বাংলাদেশের স্বস্তি

টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস / ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়িক অংশীদার চাই

২০২৪ সালের হাইয়েস্ট কালেকশন দরদের : শাকিব 

নায়িকা পরীমনির প্রথম স্বামী নিহত

রাজনীতিতে আ.লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে হবে: নুর

নির্বাচন যত দ্রুত হবে, সমস্যা তত কমে আসবে : মির্জা ফখরুল

খাসজমির দখল নিয়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ক্রীড়াঙ্গন অন্যতম একটি মাধ্যম : আমিনুল হক 

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

আহত রানার পাশে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

১০

ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক

১১

একদিকে প্রশান্তি, অশান্তিও বিরাজ করছে: শামা ওবায়েদ

১২

চোর সন্দেহে খুঁটিতে বেঁধে যুবককে নির্যাতন

১৩

র‍্যানকন মটরসের সঙ্গে ক্র্যাক প্লাটুন চার্জিং সলুশনের চুক্তি

১৪

জনকল্যাণে কাজ করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য : নয়ন

১৫

‘এক ফ্যাসিস্টকে হটিয়ে আরেক ফ্যাসিস্টকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না’

১৬

জুলাই বিপ্লবে আহত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বাবুকে নেওয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড

১৭

মাদকাসক্ত ছেলেকে কারাগারে দিলেন মা

১৮

কপ২৯-এর এনসিকিউজি টেক্সট হতাশাজনক : পরিবেশ উপদেষ্টা

১৯

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে নিরাপদ থাকবে যেসব দেশ

২০
X