ট্রাম্পের ওপর হামলার ভিডিওটি এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমসহ প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে সরাসরি হামলার দৃশ্য দেখেছে কোটি কোটি মানুষ। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক একজন প্রেসিডেন্টের ওপর এ ধরনের হামলার নিন্দা জানিয়েছেন সবাই।
এমনকি ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনও কোনো রাখঢাক ছাড়াই স্পষ্ট ভাষায় হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এফবিআই জানিয়েছে, সরাসরি হত্যার উদ্দেশেই চালানো হয়েছিল এই হামলা। কিন্তু সৌভাগ্যবশত প্রাণে বেঁচে গেছেন রিপাবলিক্যান এই নেতা। কিন্তু নির্বাচনের আগে চালানো এই হামলায় আসলে কে লাভবান হলো, উঠছে এমন প্রশ্নও।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির নর্থ আমেরিকা এডিটর সারাহ স্মিথ বলছেন, হামলায় ট্রাম্প আহত হয়েও রক্তাক্ত অবস্থায় মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে হার না মানার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই ছবি কেবল ইতিহাস নয়, আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের গতিপথও পরিবর্তন করে দিতে পারে। কারণ, প্রধান দুই দলের বাইরে সুইং ভোটার বা যারা কাকে ভোট দিবেন তা নির্ধারণ করেননি, তারা ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে এবং তার হার না মানা মানসিকতায় মুগ্ধ হতে পারেন।
ট্রাম্পের ওপর হামলা এবং রক্তাক্ত হওয়ার এসব ছবি বেশ দ্রুতই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। এমনকি সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের ছেলে এরিক ট্রাম্পও এসব ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন: ‘আমেরিকার এই ধরনের যোদ্ধাই প্রয়োজন।’
হামলার পরপরই বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারাভিযানও তাদের সমস্ত রাজনৈতিক বিবৃতি স্থগিত করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের এ সম্পর্কিত টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলোও সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছে। বাইডেনের প্রচারণা শিবির মনে করছে, এই সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করা অনুচিত হবে। স্পষ্টত, এখানে রাজনৈতিকভাবে ডেমোক্র্যাটরা চাপে রয়েছে। ফলে, সহমর্মিতা দেখানোর মাধ্যমে প্রাথমিক সেই চাপ তারা মোকাবিলার চেষ্টা করছে। আর হামলার শিকার হয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন ট্রাম্প। তবে, এটি দীর্ঘস্থায়ী না-ও হতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
এদিকে, ট্রাম্পের কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সমর্থক এরই মধ্যে হামলার জন্য বাইডেনকে দোষারোপ করছেন। ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেটর জেডি ভ্যান্স বলেছেন, প্রচারণার সময় বাইডেনের রাখা বিভিন্ন বক্তব্য সরাসরি এই ঘটনা ঘটার পেছনে ভূমিকা রেখেছে। অন্যান্য রিপাবলিকান রাজনীতিবিদরাও অনুরূপ কথা বলছেন। ফলে, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে আরও সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।