যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনের আমেজ। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বিতর্কেও অংশ নিয়েছেন বাইডেন ট্রাম্প। নির্বাচনের আমেজ যখন জমে উঠতে শুরু করেছে ঠিক তখনই সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাচনী সভায় বন্দুক হামলা হয়েছে। কেবল ট্রাম্পই নন, বেশ কয়েকজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। এছাড়া হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছিল আরও বেশ কয়েকজনকে। তবে তারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট অ্যান্দ্রো জ্যাকসন : সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যান্দ্রো জ্যাকসনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। একটি শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে তিনি হত্যাচেষ্টার শিকার হন। এ সময় তাকে লক্ষ্য করে দুবার গুলি ছোড়া হয়। তবে সৌভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান।
থিওডোর রুজভেল্ট : ডোনাল্ড ট্রাম্পের ন্যায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন। ১৯১২ সালে নির্বাচনী প্রচারণাকালে তাকে গুলি করা হয়। এক সেলুনের কর্মী তাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন।
হামলার পর রুজভেল্ট বলেন, তার সঙ্গে থাকা ৫০ পৃষ্ঠার বক্তৃতার অনুলিপি বুলেটটিকে ধীরগতির করে দেয়। এটি তাকে নিজের শরীরে আজীবন বয়ে বেড়াতে হয়েছিল। হামলার পরও সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি।
ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট : সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট ১৯৩৩ সালে হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন। এ সময় তিনি হামলা থেকে কোনোক্রমে রক্ষা পেলেও শিকাগোর মেয়র আন্তন সেরমাক গুলিতে নিহত হন।
হ্যারি এস ট্রুম্যান : ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের পর প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন হ্যারি এস ট্রুম্যান। ১৯৫০ সালে তিনিও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন। পুয়ের্তো রিকান জাতীয়তাবাদীরা তাকে লক্ষ্য করে বন্দুক হামলা চালিয়েছিল।
জর্জ ওয়ালেস : যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের চার বার নির্বাচিত গভর্নর ছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালে তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। এ সময় ওয়াশিংটন ডিসির বাইরে একটি নির্বাচনী প্রচারণায় তাকে গুলি করা হয়। এর ফলে তিনি প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিলেন।
জেরাল্ড ফোর্ড : সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড ১৯৭৫ সালের দুবার হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছিলেন। এরমধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোতে হামলার আগেই একবার তা রুখে দেওয়া হয়। এ ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর সান ফ্রান্সিসকোতেও তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তবে সেবার এক পথচারীর কারণে তিনি বেঁচে যান।
রোনাল্ড রিগান : ১৯৮১ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে হিলটনের বাইরে একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরে গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় তার প্রেস সেক্রেটারি জেমস ব্র্যাডি তার চেয়ে গুরুতর আহত হন। তার হামলাকারীকে চার দশকের বেশি সময় একটি মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আটক রাখা হয়। ২০২২ সালে তিনি আদালতের তত্ত্বাবধানে মুক্তি পান।
বারাক ওবামা : সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকেও হত্যাচেষ্টা করা হয়। ২০১১ সালে হোয়াইট হাউসে তিনি হত্যাচেষ্টার শিকার হন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের আইনানুসারে সব মার্কিন প্রেসিডেন্ট আজীবন সিক্রেট সার্ভিসের সুরক্ষা পেয়ে থাকেন।
মন্তব্য করুন