কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইরানের ভবিষ্যৎ ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে!

আয়াতুল্লাহ খামেনি ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি।
আয়াতুল্লাহ খামেনি ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি।

ইরানের সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চমক জাগিয়ে জয় পেয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। সংস্কারপন্থি এই নেতা, তার প্রচারণায় বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালাবেন তিনি। পশ্চিমা বিরোধী ইরানের এলিটদের মনোভাবের সঙ্গে এটি পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি, হয়ত পেজেশকিয়ানকে সেই সুযোগ করে দিতে পারেন।

পেজেশকিয়ানের জয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি খুশি হওয়া দেশটির নাম বোধহয় ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। মসনদে পরিবর্তন আসায় যদিও ইসরায়েলের প্রতি ইরানের নীতি বদলাবে না, কিন্তু পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পেজেশকিয়ানের সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা, তেল আবিবকে আশাবাদী করে তুলছে। আগামী নভেম্বরেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওই নির্বাচনের দিকেও ইরান অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হলে, বদলে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা।

সংস্কারপন্থির তকমা থাকলেও নীতিগতভাবে ইরানের এলিটদের অনুগতই পেজেশকিয়ান। মেইর অ্যামিট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড টেরোরিজম ইনফরমেশন সেন্টারের রাজ জিম্মিত বলেন, খামেনির সত্যিই নির্বাচনের ফল নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা থাকত তাহলে সংস্কারপন্থি পেজেশকিয়ানকে জিততে দিতেন না। বরং কট্টরপন্থিদের মধ্য থেকেই কেউ জিতুক সেটা চাইতেন খামেনি। তিনি ভেবেও নিয়েছিলেন এমনটাই ঘটবে। তাই পেজেশকিয়ানের জয়ে অনেকটা হকচকিয়ে গেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা।

অনেক বিশ্লেষকের ধারণা, খামেনি চেয়েছিলেন পেজেশকিয়ানই নির্বাচনে জয়ী হোক। কারণ তার বিশ্বাস, মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হবেন। তাই তড়িঘড়ি করে পশ্চিমাদের সামনে এমন কাউকে উপস্থাপন করতে চাইছিলেন খামেনি, যাকে তুলনামূলক ভালো বলার সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তি করে ফেলতে চেয়েছিলেন খামেনি।

তবে জিম্মিতের বিশ্বাস, খামেনি যদি সত্যিই পেজেশকিয়ানের জয় চাইতেন তাহলে তিনি এতটা না পেঁচিয়েও সেটা করতে পারতেন। পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার আলি লারজিনির মতো আরও শক্ত কাউকে অনুমোদন দিতে পারতেন তিনি। যদিও দিনশেষে সবার নিয়ন্ত্রণ খামেনির হাতেই থাকবে। সেক্ষেত্রে পেজেশকিয়ান অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রেসিডেন্ট হওয়ায়, তার ওপর নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। আর তিনি ইরানের এলিটদের প্রতি বিশ্বস্তও থাকবেন।

পেজেশকিয়ান ইরানকে পরমাণু চুক্তিতে ফিরিয়ে নিয়ে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলার চেষ্টা করতে পারেন, বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া নাগরিক সমাজ, নাগরিক অধিকার, নারী ইস্যু এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আরও উদার মনোভাব দেখাতে পারেন তিনি। এত কিছুর পরও পেজেশকিয়ানের হাতে ক্ষমতা সীমিতই থাকবে। নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরার মতো বিধান নিয়ে কিছুই করতে পারবেন না পেজেশকিয়ান।

বিদেশের মাটিতে ইরানের বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ আটকে আছে। তাই মার্কিন নির্বাচনের আগে সীমিত পরিসরে হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে পৌঁছাতে চায় ইরান। তবে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিকই রাখবেন খামেনি। তারপরও তিনি উপলব্ধি করেছেন, ইরানের অর্থনৈতিক অবস্থা দেশটির এলিটদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। এজন্য সীমিত পরিসরে পরমাণু চুক্তি এবং ইউরোপের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক উন্নয়নে বাধা দেবেন না খামেনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্ত্রীসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালকের

ধর্ম বোন বানিয়ে তারই ছেলেকে অপহরণ

এবার কলকাতায় দেখা গেল মোহাম্মদপুরের আলোচিত কাউন্সিলর আসিফকে

‘ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ব্যবহার করেনি র‍্যাব’

ব্রাজিল কোচের মাথায় হাত!

সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকায় যানজটে দৈনিক নষ্ট হচ্ছে ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা

যে কারণে সিনেমা হলে টিকিট বিক্রি করলেন সৃজিত-দেব 

তিন দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

নিউজিল্যান্ডে নৌবাহিনীর জাহাজডুবি, ৭৫ নাবিককে উদ্ধার

১০

জুয়ার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব, যুবককে কুপিয়ে হত্যা

১১

তারেক রহমানের সব মামলা আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে : কায়সার কামাল

১২

পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি

১৩

সন্ধ্যার মধ্যে ঝড় হতে পারে যেসব অঞ্চলে

১৪

স্প্যানিশ তারকার কান্নায় মাটি জয়ের আনন্দ

১৫

ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়েও আসামি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সিয়াম

১৬

মধ্যপ্রাচ্যে কত সেনা মোতায়েন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র?

১৭

ইমন হত্যা / আ.লীগের আরও ২ নেতা গ্রেপ্তার

১৮

ঢাকা মেডিকেলে অনেক লাশের মধ্যে পড়ে ছিল শহীদ রনির লাশ 

১৯

এমন বৃষ্টি আর কতদিন?

২০
X