যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান আরও জোরালো হচ্ছে। এবার প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ডও তাকে স্বেচ্ছায় সরে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। এটিই তার দেশসেবা হবে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর জো বাইডেনের এ ধরনের আহ্বানের মুখে পড়ছেন।অনেকে সরাসরি তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করছেন। এমনকি তার নিজ দল ডেমোক্র্যাটের কর্মীরাও হতাশ।
আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স ও সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন নির্বাচনে তাকে সরে দাঁড়িয়ে অন্য ডেমোক্র্যাটকে সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ড। কারণ, বাইডেনের শারীরিক অবস্থা লড়াই করার মতো নয়। তিনি সরে গেলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন ট্রাম্প। অন্যথায় ট্রাম্পের সঙ্গে লড়াই করার যোগ্যতা বাইডেনের নেই।
বাইডেনকে পত্রিকাটির সম্পাদকীয় বোর্ড বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ট্রাম্পের মধ্যে বৃহস্পতিবারের বিতর্ক প্রমাণ করেছে যে ৮১ বছর বয়সী বাইডেন ‘নিজের পরীক্ষায় ব্যর্থ’ হয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, ‘বাইডেন এখন সবচেয়ে বড় যে জনসেবা করতে পারেন তা হলো ঘোষণা করা যে, তিনি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চালিয়ে যাবেন না।’
বোর্ড বলেছে জোর দিয়ে বলেছে, চার বছর আগের বাইডেন বর্তমান মানুষটি না। তিনি আর নেতৃত্ব দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন না বলেও ইঙ্গিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই এরই মধ্যে দুই দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটি হয়েছে এবং সবক্ষেত্রে বাইডেন প্রায় তার সব প্রতিপক্ষকে হারিয়েছেন। তবে এরপরও বাইডেনকে যদি সরে দাঁড়াতে হয় তাহলে তার জায়গায় কে আসবেন, এ নিয়ে বড় সমস্যায় পড়তে হবে ডেমোক্র্যাটদের।
তবে এক জরিপে বাইডেনের বিকল্প প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চেয়েছেন দেশটির ৬০ শতাংশ ভোটার। কিন্তু তা আমলে নিতে চাচ্ছেন না বাইডেন। তিনি আবারও বিতর্কের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সিএনএনের জ্যেষ্ঠ হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা কায়লা তাউসে শুক্রবার বাইডেনের উপদেষ্টার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘বাইডেন আগামী সেপ্টেম্বরেই ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের মঞ্চে ফিরবেন।’
বৃহস্পতিবার প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দল থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রিপাবলিকান দল থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিএনএনের আটলান্টা স্টুডিওতে এ বিতর্কে অংশ নেন তারা। এতে বাইডেনের দুর্বল বিতর্কে খোদ তার ডেমোক্র্যাটিক দলের সদস্যরাই হতাশ হয়েছেন। নির্বাচনের আগে দিয়ে বাইডেনের এমন বাজে পারফরমেন্সে দল ক্ষতির মুখে পড়া নিয়েও তাদের মধ্যে উদ্বেগ, আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বাইডেনকে সরিয়ে দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে ডেমোক্র্যাট শিবিরে। কেউ কেউ বাইডেনকে সরিয়ে নির্বাচনে অন্য কাউকে প্রার্থী করার কথা বলছেন। কিছু ডেমোক্র্যাট বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর দাবি জানাতে শুরু করেছেন। আবার অনেকে বলছেন, একটা মাত্র পারফরমেন্স দেখেই তাকে সরানো উচিত হবে না।
দ্য নিউইয়র্ক পোস্টকে এক ডেমোক্র্যাট বলেন, ‘বাইডেন বিতর্কে অনেক ভুল কথা বলেছেন। কিন্তু এখন কারও উচিত তাকে সামলে নেওয়া।’
মন্তব্য করুন