দায়িত্ব গ্রহণ করেই যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিন বাণিজ্যিক অংশীদার কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের এমন সিদ্ধান্তের প্রভাব ইতোমধ্যেই বিশ্ববাজারে দেখা যাচ্ছে। ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয়েছে। ডলারের বিপরীতে দর হারিয়েছে মেক্সিকান পেসো, কানাডিয়ান ডলার ও ভারতীয় রুপিসহ অনেক মুদ্রার।
মঙ্গলবার শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। পাশাপাশি চীন ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের গৃহীত এ পদক্ষেপে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শুল্কের ব্যাপারে বরাবরই অনড় অবস্থানে থাকা ট্রাম্প দাবি করেছেন, এর ফলে আমেরিকান ভোক্তাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না, যদিও অর্থনীতিবিদরা এ ধারণার বিরোধিতা করেছেন। তবে রোববার ট্রাম্প স্বীকার করেছেন, আমেরিকানরা কিছুটা ‘অর্থনৈতিক কষ্ট’ অনুভব করতে পারেন। তবে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে আমেরিকার জন্য সুফল বয়ে আনবে বলেও দাবি করেন তিনি।
একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পণ্যের ওপরও শুল্ক আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তিনি ব্রিটেনের ওপর তৎক্ষণাৎ কোনো শুল্ক বসাচ্ছেন না, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ক্ষেত্রে তা ‘অবশ্যই ঘটবে’।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন কোনো পদক্ষেপ নিলে পাল্টা শক্ত পদক্ষেপ নেবেন তারাও। ব্রাসেলসে ইইউর প্রধান কূটনীতিক কায়া কাল্লাস সোমবার বলেছেন, ‘আমেরিকার আমাদের প্রয়োজন, আমাদেরও আমেরিকার প্রয়োজন। তবে ট্রাম্প যদি বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেন তাতে কেউ জিতবে না।’
ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা শাসনের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষে এই শুল্ক ঘোষণা এলো। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র এখনো সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ধাক্কা সামলাচ্ছে। ওই দুর্ঘটনায় রাজধানীতে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ও যাত্রীবাহী বিমান সংঘর্ষে ৬৭ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসন সরকারের ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি ধনকুবের ইলন মাস্ককে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’ চালানোর দায়িত্ব দিয়েছেন, যার লক্ষ্য হলো সরকারি ব্যয় কমানো।
মন্তব্য করুন