লন্ডনের রাজনৈতিক দৃশ্যে বর্তমানে আলোচিত নাম হলো টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি লেবার পার্টির এমপি এবং প্রাক্তন সিটি মিনিস্টার। যদিও সাধারণত তাকে একজন ভালো এবং সৎ ব্যক্তি হিসেবে ভাবা হয়, তবে বিরোধীদল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ডেভিড ডগলাস মন্তব্য করেছেন, ‘তিনি ততটা ভালো মেয়ে নন, যেভাবে সবাই তাকে মনে করে।’ এই মন্তব্যের পর, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি তদন্ত এবং তার ওপর চাপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাদ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
টিউলিপ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। এ মাসের শুরুতে, টিউলিপ সিদ্দিক ট্রেজারি মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন, যখন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এবং তার পরিবার বাংলাদেশ রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রকল্প থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৫.২ বিলিয়ন ডলার) অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এর পরেই, দেশটির বিরোধীদল টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এক ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। তারা দাবি করছে, টিউলিপ সিদ্দিক যেন হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট আসনের এমপি পদও ছেড়ে দেন। এই দাবিতে পিটিশনও চালু করা হয়েছে এবং লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে, যেখানে তার বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে।
এদিকে টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে ডেভিড ডগলাসের মন্তব্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে, টিউলিপের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলো অনেক গভীর এবং তার সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তি ও ঘটনাগুলো আরও বিশদভাবে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন।
এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ রয়েছে, তা হলো তার একটি দামি ফ্ল্যাট। ফ্ল্যাটটি তাকে উপহার দিয়েছেন এক ব্যবসায়ী যে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন। অভিযোগ উঠেছে, টিউলিপ সিদ্দিক এই ফ্ল্যাট গ্রহণ করে বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন এবং তিনি এ তথ্য গোপন করেছেন। এই অভিযোগের পর, তাকে ব্যাপক চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
টিউলিপ সিদ্দিকের এই পদত্যাগের পেছনে তার রাজনৈতিক নেতা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের পরামর্শও রয়েছে। স্যার কিয়ার স্টারমার তাকে পরামর্শ দেন, তার এই পরিস্থিতি এবং তার খালার শাসনামলের সাথে সম্পর্কের কারণে, তাকে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে।
এ ছাড়াও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস বলেছেন, এটি দুঃখজনক যে টিউলিপ সিদ্দিক তার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না। তিনি উল্লেখ করেন, টিউলিপ সিদ্দিক তার বাড়ির কর ও ফান্ডিং ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
মন্তব্য করুন