ক্রমেই বাড়ছে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা। বিপজ্জনক এ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে এক দিনে সাতশতাধিক অভিবাসী প্রবেশ করেছেন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ চ্যানেল দিয়ে সাতশতাধিক অভিবাসী অনুপ্রবেশ করেন। ছোট ছোট নৌকায় তারা এ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন, যা চলতি বছরে এক দিনে পাড়ি দেওয়া চতুর্থ সর্বোচ্চ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ নিয়ে চলতি বছরে এ চ্যানেল দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৩৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে চলতি বছরের গত ১৮ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৮৮২ জন অনুপ্রবেশ করেন।
যুক্তরাজ্যে নির্বাচনে গত জুলাই মাসে লেবার পার্টি জয় পেয়েছে। এরপর ১০ হাজারের বেশি অভিবাসী চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। দেশটির সরকার জানিয়েছে, এ ধরনের ক্রসিং বন্ধ করতে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। সাবেক পুলিশ প্রধান মার্টিন হিউইটকে নতুন সীমান্ত নিরাপত্তা কমান্ডার নিয়োগ করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেন, ছোট নৌকায় করে চ্যানেল পারাপার বন্ধ করতে ইউরোপীয় পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকার কাজ করবে। সম্প্রতি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, বিপজ্জনক ছোট নৌকায় চ্যানেল পারাপার আমরা সবাই বন্ধ করতে চাই। কেননা এটি জীবনের জন্য হুমকি এবং আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে আমরা তৎপর।
এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে প্রবেশের চেষ্টাকালে একটি নৌকাডুবে আটজন নিহত হন। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ফ্রান্সের উপকূল থেকে যুক্তরাজ্যে অনুপ্রবেশকালে ৪৬ জন নিহত হয়েছেন।
তার আগে ৩ সেপ্টেম্বর কয়েক ডজন অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। এতে ছয় শিশু এবং একজন গর্ভবতী নারীসহ ১২ জন মারা যান।
ফ্রান্সের কোস্টগার্ড জানায়, নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ছিল। যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরই এটি ডুবে যায়। বিচের উদ্ধারকর্মীরা সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ছাড়া তাৎক্ষণিক ৫৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এদের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অপরদিকে ছয়জন মারাত্মকভাবে হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে জানায়, সর্বশেষ ঘটনাটি আরেকটি ভয়ংকর এবং এড়ানো যায় এমন ট্র্যাজেডি ছিল। অভিবাসন প্রত্যাশীদের মৃত্যুহার কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি।
শরণার্থী কাউন্সিলের সিইও এনভার সলোমন বলেন, এ ধরনের মৃত্যু চাইলেই এড়ানো সম্ভব। এ জন্য নিরাপদ রুটে অভিবাসীদের গমনাগমন নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন