পরিচিতি পেয়েছিলেন জনমানুষের রাজকুমারী হিসেবে। তার হাসি, নীলাভ চোখ, মার্জিত ব্যবহার দেখে প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ বোধহয় কমই আছে। ফ্যাশন, সৌন্দর্য এবং এইডস রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে তার অবদান তাকে বিখ্যাত করেছে। তার জীবদ্দশায় ডায়ানাকে বলা হত বিশ্বের সর্বাধিক আলোকচিত্রিত নারী।
ডায়ানা ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজবধূ। মাত্র ২০ বছর বয়সে রাজপরিবারের বধূ হয়ে অভিজাত পরিবারের নিয়মকানুন শিখে নেন তিনি। কিন্তু ব্রিটেনের রাজপরিবারের রানি হতে চাননি তিনি, চেয়েছিলেন সাধারণ মানুষের হৃদয়ের রানি হতে।
মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা উজাড় করে তিনি খুব সহজেই বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের নজর কেড়েছিলেন। ডায়ানা ১৯৮১ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রথম সন্তান প্রিন্স চার্লসকে বিয়ে করার পর প্রিন্সেস অব ওয়েলস হিসেবে পরিচিত হন। ১৯৯৬ সালে বিবাহবিচ্ছেদের আগে প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি নামে তাদের দুই সন্তানের জন্ম হয়।
‘জনমানুষের রাজকুমারী’ প্রিন্সেস ডায়ানার আজ জন্মদিন। ডায়ানার জন্ম ১৯৬১ সালের ১ জুলাই ব্রিটিশ এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। বেঁচে থাকলে এখন তার বয়স হতো ৬৩ বছর। হয়তো ঘটা করে পরিবার নিয়ে জন্মদিনও পালন করতেন। কিন্তু সবকিছু এখন শুধুই স্মৃতি। কারণ মাত্র ৩৬ বয়সে ১৯৯৭ সালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ডায়ানা। সঙ্গে ছিলেন প্রেমিক মিসরীয় ব্যবসায়ী ডোডি আল-ফায়াদ।
মৃত্যুর এতগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মনে প্রিন্সেস এক অসামান্য মানুষ হিসেবে বেঁচে আছেন। কিন্তু কেনো পৃথিবীব্যাপী সবাই রাজপরিবারকে তোয়াক্কা না করেও লেডি ডায়ানাকে বিশ্বাস করেছেন? ভালোবেসেছেন নিজেদের একজন ভেবে?
জানা যায়, লেডি ডায়না বেড়ে ওঠেন সানড্রিনঘাম প্রদেশের পার্ক হাউসে। তার শিক্ষাজীবন কাটান ইংল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডে। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে তার বাগদান হয়। একবছরের মাথায় তাদের ঘর আলোকিত করে আসে প্রথম সন্তান প্রিন্স উইলিয়াম। আর ১৯৮৪ সালে জন্ম হয় প্রিন্স হ্যারির। তবে প্রিন্স চার্লস এবং ডায়ানার দাম্পত্য জীবন খুব একটা সুখকর ছিল না।
কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেলেও চার্লসের ভালোবাসা পাননি ডায়ানা। বলে রাখা ভালো, ডায়নার সঙ্গে বিয়ের আগে ক্যামিলার সঙ্গে বছর দুয়েক সম্পর্ক ছিল চার্লসের। যা বিয়ের পরও চলমান ছিল।
ডায়ানা শুধু সৌন্দর্য, স্টাইল ও মধুর স্বভাবের জন্যই নয়, বিশ্বমানবতার জন্য কাজ করেও তিনি জায়গা করে নেন বিশ্ববাসীর মনে। স্থল মাইনের ব্যবহারের বিরুদ্ধে যেমন বিশ্বজুড়ে প্রচারণা চালান প্রিন্সেস ডায়ানা। তেমনি এইডস নিয়ে সচেতনতা তৈরিতেও তিনি এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন।
প্রিন্সেস ডায়ানার একটি বিখ্যাত উক্তি- আমি যাকে ভালোবাসি, সে ছাড়া পুরো বিশ্ব আমাকে ভালোবসেছিল। সত্যিই মানবকল্যাণমূলক কাজের জন্য পুরো বিশ্ব এখনো ডায়ানাকে ভালোবাসে আর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে।
মন্তব্য করুন