বিমান দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর কলম্বিয়ার আমাজন জঙ্গল থেকে চার শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (৯ জুন) দেশটির প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গত ১ মে বিধ্বস্ত হওয়ার সময় বিমানটিতে দুই পাইলটসহ চারজনের একটি পরিবার ছিল। ওই শিশুদের বয়স যথাক্রমে ১৩, ৯, ৪ এবং ১ বছর। তারা তাদের মায়ের সঙ্গে ভ্রমণ করছিল। তাদের মাসহ বিমানে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক সবাই মারা গেছেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেছেন, শিশুদের জীবিত উদ্ধারের ঘটনায় সারা দেশে আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে। তিনি দিনটিকে ‘জাদুকরি’ উল্লেখ করে বলেন, ‘তাদের সঙ্গে পুরোটা সময় আর কেউ ছিল না। টিকে থাকার নতুন এক উদাহরণ সৃষ্টি করল ওরা। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে।’
প্রেসিডেন্ট জঙ্গলে ৪০ দিন ধরে টিকে থাকা শিশুদের একটি ছবিও দেখান। ছবিটিতে দেখা যায়, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এবং সামরিক কর্মকর্তারা শিশুদের পরিচর্যা করছে। তিনি আরও জানান, শিশুদের বর্তমানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তাদের দাদার সঙ্গে কথা হয়েছে পেত্রোর। তিনি বলেছেন, ‘জঙ্গল মা তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে।’
সেসনা ২০৬ বিমানটি আমাজন প্রদেশের আরারাকুয়ারা থেকে হোজে দেল গোয়াভিয়ারের দিকে যাত্রা করেছিল। দুর্ঘটনার আগমুহূর্তে বিমানটির ইঞ্জিন অকেজো হওয়ার অ্যালার্ম বাজিয়েছিল। বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
সিভিল অ্যাভিয়েশনের বরাতে রয়টার্স জানায়, দুর্ঘটনার পর শিশুরা ধ্বংসস্তূপ থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তারা জঙ্গলে সাহায্যের জন্য ঘুরতে থাকে।
মে মাসে ব্যাপকভাবে জঙ্গলে খোঁজাখুঁজি শুরু করা হয়। উদ্ধারকারীরা শিশুদের ফেলে যাওয়া পানির বোতল, একটি কাঁচি, একটি চুলবাঁধার ফিতা খুঁজে পান। একসময় উদ্ধারকারীরা নরম মাটিতে শিশুদের পায়ের ছোট ছোট ছাপ দেখে তাদের বেঁচে থাকার আশা পান। পরে সরকারি উদ্ধারকারীদের সঙ্গে স্থানীয় আদিবাসীরাও যোগ দেন। এ সময় হেলিকপ্টার থেকে শিশুদের দাদির কণ্ঠে রেকর্ড করা কথা শোনানো হয়। হুইতো ভাষায় তাদের নড়াচড়া করতে নিষেধ করা হচ্ছিল যেন তাদের খুঁজে পাওয়া সহজ হয়।
মন্তব্য করুন