ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ হাইতির প্রধান কারাগার থেকে প্রায় চার হাজার কয়েদি পালিয়ে গেছেন। এ সময় গ্যাং সদস্যদের হামলায় কারাগারে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এমন অবস্থায় দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৭২ ঘণ্টার জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সরকার। তবে জরুরি অবস্থা জারি করা হলেও গ্যাং নেতারা প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির পদত্যাগ দাবি করছেন। খবর বিবিসির।
হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে সশস্ত্র গ্যাংগুলো। গত বৃহস্পতিবার থেকে সেখানে নতুন করে সহিংসতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এরপর শনিবার রাতে শহরের প্রধান কারাগারে হামলা চালায় গ্যাং সদস্যরা এবং রোববার নাগাদ হাজার হাজার কয়েদি কারাগার থেকে পালিয়ে যান।
মূলত গত বৃহস্পতিবার হাইতিতে কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে নাইরোবি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি। তিনি সফরের উদ্দেশে দেশ ছাড়া মাত্রই এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। গ্যাং লিডার জিমি চেরিজিয়ার এরিয়েল হেনরিকে উৎখাতের জন্য সমন্বিত আক্রমণের ঘোষণা দেন। পুলিশ কর্মকর্তা থেকে গ্যাং লিডার বনে যাওয়া জিমি চেরিজিয়ারের বিরুদ্ধে পোর্ট-অ-প্রিন্সে বেশ কয়েকটি গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
পোর্ট-অ-প্রিন্সের কারাগারে যারা বন্দি ছিলেন তাদের মধ্যে ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিরাও ছিলেন। ২০২১ সালে মোয়েস নিহত হওয়ার পর হাইতিতে গ্যাং সংশ্লিষ্ট সহিংসতা আরও বেড়ে যায়। এমনকি ২০১৬ সালের পর দেশটিতে আর কোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়নি।
একটি একটি রাজনৈতিক চুক্তি অনুযায়ী, গত ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হেনরির পদত্যাগ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি কোনো নির্বাচন আয়োজন না করে প্রধানমন্ত্রী পদে রয়ে যান। তবে কেনিয়া সফরের পর থেকে তার আর খোঁজ মিলছে না।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের একটি এবং ক্রোয়েক্স ডেস বুকেটের একটি কারাগারে রোববার হামলা হয়েছে। এই ধরনের বিদ্রোহমূলক কর্মকাণ্ড দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এই কর্মকাণ্ডের জবাবে তাত্ক্ষণিক নৈশকালীন কারফিউ জারি করা হলো।
মন্তব্য করুন