একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ছেন পূর্ণ শক্তিতে। গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে দুই হাত দিয়ে করছেন ঘুষাঘুষি। আবার কখনো টানছেন একে অপরের চুল। এভাবেই হাজার হাজার মানুষের সামনে লড়াই করছেন দুই নারী। তাদের দেখে করতালি দিচ্ছে উৎসুক জনতা। উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি দুই নারীর এমন লড়াইয়ে যেন চাঙা হয়ে উঠেছে পুরো জনপদ।
খালি হাতে কিল-ঘুষির এই লড়াই এক ধরনের উৎসব। প্রতি বছরই ঘটা করে এই উৎসব পালন করা হয়। আর এই লড়াই দেখতে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। বড়দিনের ভোরবেলায় পেরুতে ঐতিহ্যবাহী এই তাকানাকুই আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এই উৎসবে মারামারির মাধ্যমে পুরোনো বিরোধ মীমাংসা করা হয়। শুধু বীরত্ব প্রকাশের জন্যও এই লড়াইয়ে অংশ নেন অনেকে। উন্মুক্ত একটি মাঠে দুই নারী একে অপরের বিরুদ্ধে খালি হাতে লড়াইয়ে নামেন। এটা অনেকটা কুস্তি খেলার মতো। তবে এখানে কিলঘুসি সহ প্রতিপক্ষকে সবরকম ভাবে আঘাত করা যায়।
তাকানাকুই এর উৎপত্তি পেরুর চুমবিভিলকাস প্রদেশে। কুয়েচুয়া ভাষায় তাকানাকুই অর্থ হচ্ছে একে অন্যকে আঘাত করা। উৎসব উপলক্ষ্যে কয়েকদিন ধরে চলে মদ্যপান আর নাচগান। তাকি উনকুই নামক প্রতিরোধ আন্দোলনকে সম্মান করে গাওয়া হয় ওয়েইলিয়া নামের বিশেষ ঘরানার সঙ্গীত।
সাধারণত তিন মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় না তাকানাকুই লড়াই। পুরো লড়াই পরিচালনা করেন একজন রেফারি। এই লড়াইয়ে শুধু ঘুষি ও লাথির অনুমতি রয়েছে। আর প্রতিপক্ষ মাটিতে পড়ে গেলে তাকে আঘাত করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
কীভাবে অভিনব এই উৎসবের উৎপত্তি হয়েছে তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে উৎপত্তি যেভাবেই হোক নিঃসন্দেহে বিবাদ মেটানোর অনন্য এক উপায় এটি।
মন্তব্য করুন