ব্রাজিলে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দাবানলে বিশাল এলাকা ছাই হয়ে গেছে। নানা পদক্ষেপ নিয়েও রোধ করা যায়নি দাবানলের ভয়াবহতা। এবার প্রকৃতিতে বিরল উপহার নিয়ে এসেছে দাবানলের ছাই। এলাকাটিতে সবুজ অঙ্কুরে বিশাল তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (০৩ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সাভানার এ অঞ্চলটির আয়তন প্রায় দুই মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার, যা দেশটির মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক পঞ্চমাংশ। গত সেপ্টেম্বরে এলাকাটিতে এক হাজার ৪৭০ হেক্টর এলাকাজুড়ে দাবানলের ধ্বংসলীলা দেখা যায়। এলাকাটিতে এখনও কালো মাটি ও পোড়া গাছের গুঁড়ি তার সাক্ষ্য দিয়ে আসছে।
ওই সময়ে রেকর্ড খরার কবলে পড়েছিল ব্রাসিলিয়া। তখন শহরটিতে ১৬৯ দিনই কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এ বছর ছিল রেকর্ড খরার ও এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ দাবানলের মৌসুম। এ জন্য বিশেষজ্ঞরা জলাবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছেন। তবে এমন অবস্থার মধ্যে সেরাডো, আমাজন ও প্যান্টানাল জলাভূমি লাখ লাখ বছর ধলে এলাকাটিতে সুপার পাওয়ার হিসেবে কাজ করে আসছে। এটি অগ্নিকাণ্ড এবং উচ্চ তাপমাত্রার প্রতিরোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে।
দেশটির সরকারি সংস্থা মেন্ডেস ইনস্টিটিউট ফর বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশনের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ কেইকো পেলিজারো বলেনর, সেরাডো একটি উল্টানো বন। এ বনের আমরা মাত্র একটি ভগ্নাংশ দেখতে পাই। কেননা এটি আমাদের পায়ের নিচে রয়েছে। এটি হলো একটি গভীর পাম্পের মতো। যা চরম খরার সময়েও ভূগর্ভস্থ জল চুষে নেওয়ার কাজ করে।
ব্রাসিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিদ্যার অধ্যাপক ইসাবেল শ্মিট বলেন, এ বনের গাছের পুরু ছাল ও ফলের খোসা তাপ নিরোধক হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ৮০০ সেন্টিগ্রেড হলেও গাছপালা বেঁচে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দাবানলের এক মাস পরে বৃষ্টিতে ঘাস ও ছোট ছোট গাছপালা বাড়তে শুরু করেছে। এ ছাড়া ব্রাসিলিয়া জাতীয় উদ্যানের পোড়া গাছেও নতুন পাতা গজাচ্ছে। বৃষ্টি না হলেও আমরা কিছুটা স্থিতিস্থাপকতা দেখতে পেতাম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলের পুলিশ এখনও ব্যাসিলিয়া জাতীয় উদ্যানে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করছে।
মন্তব্য করুন