২৫ বছর ধরে ভেনেজুয়েলায় ক্ষমতায় রয়েছে নিকোলাস মাদুরোর দল। তার মধ্যে টানা ১১ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছেন মাদুরো। বলা হচ্ছিল এবারের নির্বাচনে তিনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। তবে বিতর্কিত নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখলেন সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টির এ নেতা।
রবিবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন পিএসইউভি পার্টি। তবে ভোট গণনায় ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার কথা জানিয়েছে মাদুরোর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডমুন্ড গনজালেস।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিলের (সিএনই) প্রধান ও মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মিত্র এলভিস আমরোসো জানিয়েছেন, ৮০ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা গেছে- মাদুরো ৫১ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচনের আগে হওয়া প্রায় সব জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন গনজালেস। তবে যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা ধরে রাখবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মাদুরো। নিজ দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ দাবি করে মাদুরো বলেছিলেন, এবার যদি তিনি নির্বাচিত না হন, তাহলে ‘রক্তগঙ্গা’ বয়ে যাবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভোট গণনায় যাতে কোনো কারচুপি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে সারা দেশের ভোটকেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার ‘সাক্ষী’ মোতায়েন করেছিল। কিন্তু তাদের ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি করেছেন গনজালেসের নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র।
দেশটির অনেক নাগরিকের দাবি, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার সুযোগে নির্বাহী বিভাগের পাশাপাশি আইন ও বিচার বিভাগের ওপর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে মাদুরোর দল। আর সেই প্রভাব নির্বাচনেও কাজে লাগিয়েছেন মাদুরো।
ভেনেজুয়েলায় ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট নেওয়া হয়। ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রটি প্রতিটি ভোটের জন্য একটি কাগজের রসিদও প্রিন্ট করে, যা পরে একটি ব্যালট বাক্সে রাখা হয়। আইন অনুসারে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলো প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের রসিদ গণনার জন্য সাক্ষী পাঠাতে পারবে।
বিরোধীদের দাবি, রসিদ গণনার কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে ও মুদ্রিত রসিদের এক তৃতীয়াংশেরও কম অংশ বিরোধীদের সাক্ষীর সামনে আনা হয়েছে।
এবারের নির্বাচনকে ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা মাদুরোর রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে পরীক্ষার প্রথম দফায় অর্থাৎ নির্বাচনী জালিয়াতিতে তিনি সফল হয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন