পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণে শেষ হয়েছে। এখন চলছে ভোট গণনা। আর তাতেই ভরাডুবি হয়েছে দেশটির তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এন) নেতা নওয়াজ শরিফের। শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) সামা টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে এনএ-১৫ মানসেরা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নওয়াজ। তবে সেখানে তার ভরাডুবি হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। তবে এর বাইরে আরও একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।
আসনটির বেসরকারি ফলাফলে দেখা গেছে, নওয়াজ শরিফ সেখানে ৬৩ হাজার ৫৪টি ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদা গাস্তাসাপ পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৭১৩ ভোট। ফলে ১১ হাজার ৬৫৯ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন এ স্বতন্ত্র প্রার্থী।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নওয়াজ শরিফের এ ভরাডুবিকে দেশটির নির্বাচনী দৃশ্যপটে বিরাট বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এর বাইরে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী লাহোরের এনএ-১৩০ আসনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনে তার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন ইয়াসমিন রশিদ।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ১৩ ঘণ্টা পরও অধিকাংশ কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়নি। ভোট গণনায় এমন বিলম্বকে অস্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা। নির্বাচনের পরদিন শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত মাত্র ১২টি আসনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
দেশটির প্রভাবশালী পত্রিকা ডন বলছে, ফলাফল প্রকাশ হওয়া ১২ আসনের মধ্যে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ৫টিতে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের দল পিএমএল-এন ৪টিতে এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি তিনটিতে জয়ী হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণের দিন দেশজুড়ে মোবাইল ফোন সংযোগ স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া বোমা হামলা ও নানা সহিংসতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে নির্বাচন। এরপর ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণায় ধীরগতি দেখা যাওয়ায় এসব সহিংসতা এবং ইন্টারনেট সমস্যাকে দায়ী করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্র থেকে ফল আসতে অস্বাভাবিক ধীরগতির কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সও।
যদিও কারাগারে বন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই বলছে, ফল প্রকাশে এই বিলম্ব ভোট কারচুপির লক্ষণ। এবারের নির্বাচনে ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী দিতে হয়েছে ইমরানের দল পিটিআইকে।
মন্তব্য করুন