ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধের পর লোহিত সাগরে ধারাবাহিক বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা হচ্ছে। জাহাজে হামলার কারণে এ পথ দিয়ে চলাচলকারী কোম্পানিগুলো তাদের পথ পরিবর্তন করছে। সবশেষ লোহিত সাগরে পাকিস্তানগামী জাহাজে হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা জানিয়েছে, তারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। একই সময় ইসরায়েলের বন্দরনগরী এইলাতেও হামলা চালানো হয়। গাজায় ইসরায়েলের অভিযান শেষ করার জন্য চাপ দিতে এমন হামলা করা হয়েছে বলে দাবি দলটির।
হুতির সামরিক বিভাগের মুখপাত্র ইয়াহইয়া সারি বলেন, লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ এমএসসি ইউনাইটেড ভেসেলেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়েছে। জাহাজটিকে তিনবার সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও তা প্রত্যাখ্যান করায় এ হামলা করা হয়েছে।
শিপিং কোম্পানি এমএসসি জানিয়েছে, এমএসসি ইউনাইটেড-৮ জাহাজটি সৌদি আরবের কিং আব্দুল্লাহ বন্দর থেকে পাকিস্তানের করাচি যাচ্ছিল। মঙ্গলবার এ জাহাজটিতে হামলা হয়েছে। তবে হামলার পরও জাহাজের সব ক্রুরা অক্ষত রয়েছেন।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা জাহাজে হামলার ঘটনাটি মূল্যায়ন করছে এবং লোহিত সাগরের নিরাপত্তায় গঠিত মার্কিন জোটকে বিষয়টি অবহিত করেছে।
এর আগে লোহিত সাগরে ভারতগামী একটি অপরিশোধিত তেলবাহী ট্যাংকারে হামলা চালায় ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা গত শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড।
ড্রোন হামলার শিকার ট্যাংকারটির নাম এমভি সাইবাবা। এটি গ্যাবনের পতাকাবাহী একটি ট্যাংকার। হামলার সময় বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাবিক এতে ছিলেন। তবে তারা কেউ হতাহত হননি।
সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছে, দুটি জাহাজ হামলা শিকার হয়েছে বলে দক্ষিণ লোহিত সাগরে টহলরত মার্কিন নৌবাহিনীর একটি জাহাজের কাছে বার্তা পাঠায়। তাদের মধ্যে একটি নরওয়ের পতাকাবাহী ও মালিকানাধীন রাসায়নিক ট্যাংকার এমভি ব্লামানেন এবং অন্যটি এমভি সাইবাবা। নরওয়ের পতাকাবাহী ট্যাংকারটি হুতিদের ড্রোন হামলার শিকার হতে হতে বেঁচে গেলেও ভারতগামী ট্যাংকার এমভি সাইবাবা ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে।
এই দুই জাহাজের ডিস্ট্রেস কলের সাড়া দিয়ে এগিয়ে যায় মার্কিন ডেস্ট্রয়ার জাহাজ উএসএস ল্যাবুন। এরপর ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ছোড়া চারটি ড্রোন ভূপাতিত করে জাহাজটি।
এর আগে শনিবার ভোরে ভারত মহাসাগরে একটি রাসায়নিকবাহী ট্যাংকারে ড্রোন হামলা হয়েছে। ইরান এই হামলা করেছে বলে দাবি করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাসের সমর্থনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। গাজায় ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি মালিকানাধীন ও ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছে ইরানের সমর্থনপ্রাপ্ত হুতি সদস্যরা।
মন্তব্য করুন