কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর যে কোনো সময় প্রতিবেশী ভারত সামরিক আক্রমণ চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। তিনি জানিয়েছেন, সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ইসলামাবাদে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ এ মন্তব্য করেন। যদিও তিনি সম্ভাব্য হামলার নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেননি।
পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে আসিফ বলেন, পাকিস্তানের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি তৈরি হলে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিতেও দ্বিধা করবে না।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং এক নেপালি পর্যটক নিহত হন। হামলার পর ভারতজুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং জবাবমূলক পদক্ষেপের দাবি ওঠে।
ভারত দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, পাকিস্তান কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে মদদ দিয়ে আসছে। এই বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র অতীতে দুবার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়েছে।
রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, আমরা আমাদের বাহিনীকে শক্তিশালী করেছি। কারণ এখন সামরিক আক্রমণ যে কোনো সময় ঘটতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কৌশলগত কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং আমরা ইতোমধ্যে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরও জানান, কাশ্মীর হামলার ঘটনার পর ভারত থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হুমকির মাত্রা বেড়েছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করেছে। তবে ভারতীয় হামলার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা সময়সূচি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেননি তিনি।
কাশ্মীর হামলার ঘটনায় ভারত দুই সন্দেহভাজন হামলাকারীকে পাকিস্তানি বলে চিহ্নিত করেছে। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান বর্তমানে উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। আমরা কেবল তখনই আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার ব্যবহারের কথা বিবেচনা করব, যদি আমাদের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি তৈরি হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যে কোনো সামরিক সংঘর্ষ গোটা অঞ্চলে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে। ফলে আন্তর্জাতিক মহলেও পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন