কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জরুরি বৈঠকে বসেছে ভারতের ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস)। এ সভায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় পাঁচ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটি ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটির (সিসিএস) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল, পাকিস্তানের সঙ্গে আটারি সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানে ভারতের হাইকমিশন থেকে কর্মী প্রত্যাহার, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশটির নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ।
সভায় সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হল ১৯৬০ সালের ‘সিন্ধু পানিচুক্তি’ অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করা। পাকিস্তান যতক্ষণ না বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং অপরিবর্তনীয়ভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রতি তার সমর্থন প্রত্যাখ্যান করে ততক্ষণ এ চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। ।
সভার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো পাকিস্তানের সঙ্গে ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে। এর ফলে যারা বৈধ অনুমোদন নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেছেন তাদের আগামী ০১ মের মধ্যে দেশে ফিরতে হবে।
এছাড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের ‘সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম’ (এসভিইএস) বাতিল করা হয়েছে। ফলে এখন যারা দেশটিতে এ ভিসায় অবস্থান করছেন তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভার অন্যতম আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনে নিযুক্ত নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের পার্সোনা নন গ্রেটা ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের ভারত ত্যাগের জন্য এক সপ্তাহ সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে, ভারতের ইসলামাবাদ হাই কমিশন থেকেও তাদের নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এছাড়া উভয় হাই কমিশনের কর্মীসংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনা হবে, যা ১ মের মধ্যে কার্যকর হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিসিএস সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। যারা হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে এবং যারা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তহাওয়ুর রানার প্রত্যর্পণের মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত তার অবস্থানে অনড় থাকবে—সন্ত্রাসে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।
মন্তব্য করুন