অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সমর্থনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ।
একইসঙ্গে সেই রোষ গিয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাস্টফুড চেইন কেএফসির ওপর। দেশটির বিভিন্ন শহরে কেএফসির আউটলেটে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী ইসলামাবাদ, বন্দরনগরী করাচি ও লাহোরসহ পাকিস্তানের বড় শহরগুলোতে কেএফসির অন্তত ১১টি আউটলেটে লাঠি ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে ব্যাপক ভাঙচুর ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
এদিকে এই হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। লাহোরে কেএফসির ২৭টি আউটলেটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটিতে হামলা হয়েছে, আর পাঁচটিতে হামলার চেষ্টা চালানো হয়।
এ ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, চলতি সপ্তাহে কেএফসির এক কর্মীকে অজ্ঞাত বন্দুকধারী গুলি করে হত্যা করেছে। তবে ঘটনার সময় কোনো বিক্ষোভ চলছিল না। হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি এবং তদন্ত চলছে।
এছাড়া, পাকিস্তানের ইসলামপন্থি ধর্মীয় সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানের (টিএলপি) একজন সদস্যকেও ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই সংগঠনটি বিক্ষোভ আয়োজনের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন লাহোর পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফয়সাল কামরান।
টিএলপির মুখপাত্র রেহান মোহসিন বলেন, আমরা মুসলিমদের ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছি। তবে কেএফসির সামনে কোনো বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়নি।
উল্লেখ্য, কেএফসি এবং এর প্যারেন্ট কোম্পানি ইয়াম ব্র্যান্ডস- উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক। পাকিস্তানে চলমান হামলা ও বিক্ষোভের বিষয়ে তারা এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এ ঘটনায় পাকিস্তানে মার্কিন পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে বয়কটের ডাক দিলেও সহিংসতায় রূপ নেওয়া ঘটনাগুলো প্রশাসনকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
মন্তব্য করুন